নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনি জটিলতায় চার বছরের অধিক সময় ধরে মর্গে আটকে থাকা ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত নীলফামারীর হোসনে আরা লাইজুর (নীপা রানী) মরদেহ ইসলামী ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে মেয়ের বাবার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সমীর মজুমদার। ছেলের বাবার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ কে এম বদরুদ্দোজা।
রায়ের কপি পাওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে মরদেহ দাফন করতে নীলফামারীর জেলা প্রশাসককে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। হাকিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে দাফনকাজ সম্পন্ন করতে হবে। দাফনের আগে হোসনে আরার (নীপা রানী) লাশ তার বাবার পরিবারকে দেখার সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।
মামলার বরাত দিয়ে অ্যাডভোকেট এ কে এম বদরুদ্দোজা জানান, পারিবারিক জটিলতায় ২০১৪ সালের ১০ মার্চ থেকে নীপার মরদেহটি হাসপাতালের মর্গেই পড়ে আছে। ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার কারণে মরদেহ নিয়ে এমন আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবার। মামলাটি বিচারিক আদালত ঘুরে হাইকোর্টে আসে। রংপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে মরদেহ হস্তান্তর করতে পারেনি।
আইনজীবী আরো জানান, ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেন নীপা-লাইজু। এভাবেই কাটছিল লাইজু ও নীপা রানী ওরফে হোসনে আরার দিন। কিন্তু বাদ সাধে নীপার পরিবার। নীপা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার পরিবার লাইজুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করে।
এ মামলায় লাইজুকে নেয়া হয় কারাগারে। নীপাকে রাখা হয় নিরাপত্তা হেফাজতে। পরে নীপাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয় তার পরিবার। লাইজুও জেল খেটে বের হন। কিছুদিন পর লাইজু বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। নীপাও শোকে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন।
এরপর নীপার মরদেহ দাবি করে আদালতে মামলা করে দুই পক্ষই। এ মামলাটি নিম্ন আদালত ঘুরে উচ্চ আদালতে আসে। আজ উচ্চ আদালত থেকে সিদ্ধান্ত আসে হোসনে আরার (নীপা রানী) মরদেহ ইসলামী ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন করতে হবে।
Discussion about this post