অ্যাডভোকেট সোয়েব রহমান
নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন,২০১৩ এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে শুধুমাত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে কোনো ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার,যেমন-পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, অবৈধ আটকাদেশ,বেআইনিভাবে গৃহ বা দেহ তল্লাশী,মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করলে ভুক্তভোগী কিংবা তার আত্মীয় নয় এমন ব্যক্তি,এমনকি যে কোন প্রত্যক্ষদর্শীও এই আইনের মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ বা মামলা দায়ের করতে পারবেন।এই আইন অনুসারে অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে ন্যূনতম পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ন্যূনতম পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।আবার নির্যাতনের ফলে যদি কোন ব্যক্তির মৃত্যু হয় তাহলে নির্যাতনকারীর ন্যূনতম যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ন্যূনতম এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং এর অতিরিক্ত দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন।
২০টি ধারা সম্বলিত এ আইনে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ অন্যান্য সকল প্রকার সরকারি হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার
অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের,এর শাস্তি,অনুসন্ধান ও তদন্ত,বিচার ,জামিন ও আপীল,জরিমানা আদায়,ক্ষতিগ্রস্ত অথবা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এমনকি সাক্ষীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রেও বিশেষ কিছু বিধান নিয়ে নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল যেখান থেকে এই আইন ও এর প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
আইনত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে [ধারা ২(৪) এবং ধারা ২(৫)]
এই আইন অনুসারে ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’ ও ‘সশস্ত্র বাহিনীর’ বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে। ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’ অর্থ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ভিডিপি ও কোস্টগার্ডসহ দেশে আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী সরকারি কোনো সংস্থা। আর ‘সশস্ত্র বাহিনী’ অর্থ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী অথবা অন্য কোনো রাষ্ট্রীয় ইউনিট যা বাংলাদেশ প্রতিরক্ষার জন্য গঠিত।
অভিযোগের ধরন [ধারা ২(৬) এবং ধারা ২(৭)]
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন: এই আইন অনুসারে “নির্যাতন” অর্থ কষ্ট হয় এমন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন; এতদ্ব্যতীত—
(ক) কোনো ব্যক্তি বা অপর কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে তথ্য অথবা স্বীকারোক্তি আদায়ে;
(খ) সন্দেহভাজন অথবা অপরাধী কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদানে;
(গ) কোনো ব্যক্তি অথবা তাহার মাধ্যমে অপর কোন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখানো;
(ঘ) বৈষম্যের ভিত্তিতে কারো প্ররোচনা বা উস্কানি, কারো সম্মতিক্রমে অথবা নিজ ক্ষমতাবলে কোনো সরকারি কর্মকর্তা অথবা সরকারি ক্ষমতাবলে—
এইরূপ কর্মসাধনও নির্যাতন হিসাবে গণ্য হবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু: এই আইন অনুসারে”হেফাজতে মৃত্যু” অর্থ সরকারি কোনো কর্মকর্তার হেফাজতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু;
ইহাছাড়াও হেফাজতে মৃত্যু বলতে অবৈধ আটকাদেশ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক গ্রেপ্তারকালে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুকেও নির্দেশ করবে; কোনো মামলায় সাক্ষী হউক বা না হউক জিজ্ঞাসাবাদকালে মৃত্যুও হেফাজতে মৃত্যুর অন্তর্ভুক্ত হবে।
আদালতে অপরাধের অভিযোগ[ধারা-৪]
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ (Code of Criminal Procedure 1898, Act V of 1898) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, তা সত্ত্বেও এই আইনের এখতিয়ারাধীন কোন আদালতের সামনে কোন ব্যক্তি যদি অভিযোগ করে যে,তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যে দ্বারা নির্যাতন করা হয়েছে,তাহলে উক্ত আদালত তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারী ব্যক্তির বিবৃতি লিপিবদ্ধ করবেন;
# একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা অবিলম্বে তার দেহ পরীক্ষার আদেশ দিবেন;
# অভিযোগকারী মহিলা হলে রেজিস্টার্ড মহিলা চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করবার ব্যবস্থা করবেন।
# চিকিৎসক অভিযোগকারী ব্যক্তির দেহের জখম ও নির্যাতনের চিহ্ন এবং নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখপূর্বক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইহার একটি রিপোর্ট তৈরী করবেন।
# সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক প্রস্তুতকৃত রিপোর্টের একটি কপি অভিযোগকারী অথবা তার মনোনীত ব্যক্তিকে এবং আদালতে পেশ করবেন।
# চিকিৎসক যদি এমন পরামর্শ দেন যে পরীক্ষাকৃত ব্যক্তির চিকিৎসা প্রয়োজন তাহলে আদালত অভিযোগকারী ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ প্রদান করবেন।
আদালত কর্তৃক মামলা দায়েরের,তদন্ত এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দান [ধারা-৫]
# সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির বিবৃতি লিপিবদ্ধ করার পর আদালত অনতিবিলম্বে বিবৃতির একটি কপি সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারের কাছে বা ক্ষেত্রমত, তদূর্ধ্ব কোন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করবেন এবং একটি মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রদান করবেন।
# পুলিশ সুপার উক্ত আদেশ প্রাপ্তির পর পরই ঘটনা তদন্ত করিয়া চার্জ বা চার্জবিহীন রিপোর্ট পেশ করবেনঃ
# তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি মনে করেন যে পুলিশ দ্বারা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে অভিযোগকারী ব্যক্তি যদি আদালতে আবেদন করেন এবং আদালতে যদি অভিযোগকারী আবেদনে এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদন যথার্থ সেক্ষেত্রে আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ প্রদান করিতে পারবেন।
# রিপোর্ট দাখিলের সময় তদন্ত কর্মকর্তা, ক্ষেত্রমত, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কর্মকর্তা বিবৃতি প্রদানকারী/অভিযোগকারী ব্যক্তিকে তারিখসহ রিপোর্ট দাখিল সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করবেন।
তৃতীয় কোন ব্যক্তি কর্তৃক অভিযোগের অপরাপর ধরন [ধারা-৬ এবং ৭]
# ধারা ৫ ও ৬ এ বর্ণিত প্রক্রিয়া ছাড়াও কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া সত্ত্বে তৃতীয় কোন ব্যক্তি দায়রা জজ আদালতে অথবা পুলিশ সুপারের নিচে নয় এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তার নিকট নির্যাতনের অভিযোগ দাখিল করিতে পারবে।
# এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সুপার অথবা তার চেয়ে ঊধ্বর্তন পদমর্যাদার কোনো অফিসার তাৎক্ষণিক একটি মামলা দায়ের ও অভিযোগকারীর বক্তব্য রেকর্ড করবেন এবং মামলার নম্বরসহ এই অভিযোগের ব্যাপারে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে ইহা অভিযোগকারীকে অবহিত করবেন।
# উপরে বর্ণিত মোতাবেক অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণকারী পুলিশ সুপার অথবা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়রা জজ আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করবেন।
অপরাধ তদন্তের সময়সীমা [ধারা-৮]
# ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যা কিছু থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের তদন্ত প্রথম অভিযোগ লিপিবদ্ধ করিবার তারিখ হতে পরবর্তী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
# কোন যুক্তিসংগত কারণে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে,তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে আদালতে উপস্থিত হয় বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করবেন।
# আদালত ক্ষতিগ্রস্ত/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি/ব্যক্তিদের শুনানী গ্রহণ কর ৩০ দিনের মধ্যে সময় বৃদ্ধির বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ [ধারা-১০]
এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় সকল অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণীয় (Cognizable), অ-আপোষযোগ্য (non-compoundable) ও জামিন অযোগ্য (non-bailable) হবে।
ভুক্তভোগী,ক্ষতিগ্রস্ত অথবা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এমনকি সাক্ষীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ- [ধারা-১১]
# অভিযোগকারী কোনো ব্যক্তি এই আইনে অভিযুক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিধানকল্পে দায়রা জজ আদালতে পিটিশন দায়ের করতে পারবেন।
# রাষ্ট্র এবং যার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে তাদেরকে উক্ত পিটিশনের পক্ষভুক্ত করা যাবে।
# পিটিশন গ্রহণ করে আদালত বিবাদীকে সাত দিনের নোটিশ জারি করবেন এবং ১৪ দিনের মধ্যেই পিটিশনের ওপর একটি আদেশ প্রদান করবেন।
# উপরে উল্লিখিত এ ধরনের কোনো মামলা নিষ্পত্তিকালে আদালত প্রয়োজনবোধে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্যূন সাত দিনের অন্তরীণ আদেশ দিতে পারবেন এবং সময়ে সময়ে উহা বৃদ্ধি করতে পারবেন।
# আদালত এই আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তদন্ত কর্মকর্তাদের আদালতের আদেশ পালন নিশ্চিত করবার নির্দেশ দিতে পারবেন।
# আদালত নিরাপত্তা প্রার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিতে পারবেন এবং প্রয়োজনবোধে আদালত স্থানান্তর এবং বিবাদীর নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করাসহ নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারবেন।
অপরাধ [ধারা-১৩]
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোন সদস্যে এই আইনের অধীনে কৃত কোনো অপরাধ–
-কোনো ব্যক্তি বা অপর কোনো ব্যক্তির নিকট হতে তথ্য অথবা স্বীকারোক্তি আদায়ে;
-কোনো ব্যক্তি অথবা তার মাধ্যমে অপর কোন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখানো;
-বৈষম্যের ভিত্তিতে কারো প্ররোচনা বা উস্কানি,
-কারো সম্মতিক্রমে অথবা নিজ ক্ষমতাবলে কোনো সরকারি কর্মকর্তা অথবা সরকারি ক্ষমতাবলে—এমন কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে,এইরূপ কর্মসাধন অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।
এছাড়াও, কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী উপরে উল্লিখিত কোনো অপরাধ—
-সাধনে উদ্যোগী হন;
-সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচিত করেন; অথবা
-সংঘটনে ষড়যন্ত্র করেন—
তাহলে এই আইনের অধীনে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে।
এই আইনে কৃত অপরাধের দায়ভার অপরাধীকে ব্যক্তিগতভাবে বহন করতে হবে।
বিচার [ধারা-১৪]
# এই আইনের অধীন অপরাধের বিচার কেবলমাত্র দায়রা জজ আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।
# মামলা দায়েরের ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকার্য নিষ্পন্ন করতে হবে।
# কোন যুক্তিসংগত কারণে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে মামলার বিচারকার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হলে,আদালত পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সমাপ্ত করবে।
শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণ প্রদান [ধারা-১৫]
##আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোন সদস্যে এই আইনের ধারা ১৩ এর উপ-ধারা(১) এর অধীনে দোষী সাব্যস্ত হলে অন্যূন পাঁচ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অন্যূন পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং ইহার অতিরিক্ত পঁচিশ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি/ব্যক্তিদেরকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন।
##এছাড়াও,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের ফলে কোনো ব্যক্তির যদি মৃত্যুবরণ হয় তাহলে নির্যাতনকারী এই আইনের অধীনে অন্যূন যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং ইহার অতিরিক্ত দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি/ব্যক্তিদেরকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন।
##কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচিত করে; অথবা সংঘটনে ষড়যন্ত্র করে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি অন্যূন দুই বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অন্যূন বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
##এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের জন্য সাজাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে দণ্ড ঘোষণার দিন থেকে ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে অর্থ বিচারিক আদালতে জমা দিতে হবে।এইরূপ আবশ্যিকতা পূরণ ব্যতীত এই আইনের আওতায় কোন অপরাধের দণ্ডের বিরুদ্ধে কোন আপীল করা যাবে না।
আপীল [ধারা-১৬]
# এই আইনের অধীনে অপরাধের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করা যাবে।
# ক্ষতিগ্রস্ত/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি/ব্যক্তিরাও আপীল অথবা রিভিউর জন্য ঊর্ধ্বতন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে।
ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা ও অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ [ধারা-১৯]
কোন সরকারি কর্মকর্তা অথবা তাহার পক্ষে কর্তব্যরত কোন ব্যক্তির গাফিলতি বা অসতর্কতার কারণে অভিযোগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তার বা তার পক্ষে কর্তব্যরত ব্যক্তির গাফিলতি বা অসতর্কতার কারণে ঐ ক্ষতি হয় নাই।
পরিশেষে এ বিষয়ে বলা যায় যে,আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে কোন আসামির নির্যাতন অথবা মৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়।চলমান আইনটি সংবিধানে বর্ণিত ব্যক্তি স্বাধীনতাসহ হেফাজতে নির্যাতন বন্ধ করার জন্যই অক্ষুণ্ন রাখা প্রয়োজন ও জরুরি।অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো,বিদ্যমান আইনটি প্রায় তিন বছর আগের; এ দীর্ঘ সময়ে আইনের প্রয়োগ কতটা হয়েছে তা-ও বিবেচনার দাবি রাখে।তাই এই আইন অনুযায়ী যথাযথ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।এই আইনের উদ্দেশ্য পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক করে দেওয়া।
লেখক : আইনজীবী, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কুমিল্লা
Discussion about this post