একই মঞ্চে ফাঁসি হবে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর। এ জন্য ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে এবং কয়েক দফা মহড়াও হয়ে গেছে। এখন শুধু অপেক্ষা সরকারের নির্বাহী আদেশের।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। কারাসূত্র আরো জানায়, সাকা-মুজাহিদের রিভিউ পিটিশনের আবেদন খারিজ হওয়ার পর থেকেই ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়।
জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দু’টি ফাঁসির মঞ্চ রয়েছে। তার মধ্যে একটি মঞ্চই প্রস্তুত করা হয়েছে। এরইমধ্যে ফাঁসির মঞ্চের উপরে টানানো হয়েছে সামিয়ানা। ফাঁসি কার্যকরের জন্য ফাঁসির দড়িসহ নানা সরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কি না তার পরীক্ষা চলছে। এছাড়া ফাঁসি কার্যকরের সময়কার সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ও ক্রিয়ার মহড়াও হয়েছে কয়েক দফা।
এরইমধ্যে ফাঁসি কার্যকরের জন্য খ্যাতনামা জল্লাদ শাহজাহান ও রাজু কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থান নিয়েছে। এর আগে কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসিও কার্যকর করে এ দুই জল্লাদ। তাদের পাশাপাশি আরো বেম কয়েকজনকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না তা জানতে চায় কারা কর্তৃপক্ষ। দণ্ড থেকে বাঁচতে মানবতাবিরোধী এ দুই অপরাধীর সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া ছাড়া নেয়ার মতো আর কোনো পদক্ষেপ নেই। তাই শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কোনো এক সময়ে সিনিয়র জেলসুপার জাহাঙ্গীর কবির তাদের সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন।
এর জবাবে সাকা-মুজাহিদ বলেছেন, তারা আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা না করে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।
তবে সিনিয়র জেলসুপার তাদের বলেছেন, কারাবিধি অনুযায়ী এখন আর আইনজীবীদের সঙ্গে আপনাদের দেখা করার কোনো সুযোগ নেই। এ জবাব পেয়ে নিশ্চুপ ছিলেন সাকা-মুজাহিদ।
এরআগে বৃহস্পতিবার রাতে সাকা-মুজাহিদকে তাদের সাজার চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটের পর সিনিয়র জেলসুপার জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে একজন ডেপুটি জেলার ও একজন সহকারী জেলার তাদের রায় পড়ে শোনান।
ওই রাতেই সাকা-মুজাহিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস ও ডা. হাফিজ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। শুক্রবার সকালে ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুজনই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।’
দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া কারাগার এলাকার দু’পাশের প্রবেশপথগুলোতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে রিকশা চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে লালবাগ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ উপ-কমিশনার মো. ফয়েজ আহমেদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
Discussion about this post