খারাপ ভাঙা-চোরা রাস্তা অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পানি জমা, বন্যা, অতিরিক্ত ভারী যান চলাচল প্রভৃতি কারণে রাস্তা তৈরির পরও বেশিদিন টেকে না। এসব ঝামেলা এড়াতে এবার এসেছে নতুন প্রযুক্তি। প্লাস্টিক গৃহস্থালির প্রায় সব অঙ্গন দখল করে এবার নামলো রাস্তায়! এখন রাস্তাও হবে প্লাস্টিকের তৈরি! ফুরোচ্ছে পিচ, পাথরের রাস্তার যুগ।
ডাচ কোম্পানি ভলকারওয়েসেলস হাতে নিয়েছে প্লাস্টিক সড়ক তৈরির একটি প্রকল্প। যেখানে প্লাস্টিকের সড়কগুলো লেগো ব্রিকসের মতোই জোড়া দিয়ে লাগানো ও খোলা সম্ভব।
নেদারল্যান্ডের রটারডাম শহরের স্ট্রিট ল্যাবে প্লাস্টিক সড়ক তৈরির টাইলস নির্মাণ ও এর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পুরোনো প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাত করে প্লাস্টিক সড়ক তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ভলকারওয়েসেলস জানায়, এ সড়কের নির্মাণ খরচ সাধারণ পিচের সড়কের নির্মাণ খরচের চেয়ে কম হবে। একইসঙ্গে এটি অতিরিক্ত তাপমাত্রা (৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত) প্রতিরোধক।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, সাধারণত পিচের সড়ক তৈরিতে সময় লাগে প্রায় একমাস। সেখানে এই প্লাস্টিকের সড়ক তৈরি করতে সময় লাগবে মাত্র এক সপ্তাহ।
পিচের তুলনায় এ সড়ক অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। কারণ পিচ পোড়ানোর ফলে প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ১.৬ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ।
ভলকারওয়েসেলসের রোডস সাবডিভিশন ডিরেক্টর রল্ফ মার্স জানান, সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ বর্তমান রাস্তাগুলোর চেয়ে প্লাস্টিকের রাস্তার সুবিধা অনেক ।
প্রতিষ্ঠানের দাবি, নতুন উদ্ভাবনী এ সড়ক ওজনে হালকা ও ফাঁপা। যা মাটির ওপর চাপ কমাবে। এতে সহজেই রাস্তার ভেতরে তার ও পাইপ প্রবেশ করানো যায়।
ওজনে হালকা ও মসৃণ নির্মাণ প্রক্রিয়া রাস্তার কাজের সমস্যা অনেকখানিই কমিয়ে আনবে বলে আশাবাদী সড়ক নির্মাণ কর্তৃপক্ষ।
যদিও প্লাস্টিকের সড়ক নির্মাণ পরিকল্পনা এখনও কাগজে-কলমেই রয়েছে তবুও আগামী তিন বছরের মধ্যে প্লাস্টিকের সড়ক নির্মাণ করার প্রস্ততি নিয়েছে বলে জানিয়েছে ভলকারওয়েসেলস।
রটারডামের সিটি কাউন্সিল প্রকৌশল ব্যুরো থেকে জ্যাপ পিটারস জানান, প্লাস্টিক সড়ক তৈরির বিষয়ে তারা খুবই ইতিবাচক। আর এর জন্য তারা রটারডামকেই বেছে নিয়েছেন।
এ প্রকল্পটির পরবর্তী ধাপে রয়েছে, ভেজা মৌসুমে বা আর্দ্রতায় সড়কগুলো চলচলে কতটা নিরাপদ তা যাচাই করা।
এই উদ্ভাবনী প্রকল্পে সাহায্যের জন্য সহযোগী ও প্লাস্টিক কারখানার প্রস্তুতকারকদেরও আহ্বান জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post