কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন ভেজাল ঔষধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স বাতিলের প্রজ্ঞাপন জাড়ি করছে এবং ঐ কোম্পানির ঔষধ না কেনার জন্য গ্রাহকদের সচেতন করছে । বিভিন্ন পত্রিকা এবং অনলাইনের সংবাদ মাধ্যম সহ অনেকেই এ ব্যপারে সংবাদও প্রচার করেছে ।কিন্তু যে জায়গাগুলোতে এ সমস্ত ঔষধ সাধারনত এই কোম্পানিগুলো বিক্রি করে থাকে সে পর্যন্ত এই সংবাদগুলো পৌছায় না । প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ধোকা দেওয়া সহজ বলেই ঔষধ কোম্পানিগুলো সেসব জায়গায় ঔষধগুলো সরবরাহ করে থাকে । অনেক সময়ই দেখা যায় ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে এক ঔষধ লিখে দেন দোকানে গেলে তারা ঐ গ্রুপেরই নামসর্বস্ব কোম্পানির ঔষধ দিয়ে দেয় । অশিক্ষিত মানুষগুলো না বুঝেই সে ঔষধগুলো কিনে নেয় । গ্রামেগঞ্জে হাতুরে ডাক্তারের সংখ্যা এখনও অনেক । তারা টাকার বিনিময়ে বা অনেক সময় না বুঝেই এই ঔষধগুলো দিয়ে দিচ্ছেন এবং লাভবান হচ্ছে কোম্পানিগুলো আর চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ছে সাধারন জনগন ।
ঔষধ প্রশাসন কোন কোন কোম্পানির ঔষধ না কেনার জন্য বলছে তার একটি চার্ট প্রতি ঔষধের দোকানে ঝুলিয়ে দেওয়ার নিয়ম চালু করা যেতে পারে ।এতে করে ঔষধের দোকানিরাও সচেতন হবে কোন কোন ঔষধ বিক্রি করা যাবেনা এই সম্পর্কে এবং গ্রাহকরাও কিছুটা বুঝতে সক্ষম হবে কোন কোম্পানির ঔষধ ক্রয় করলে স্বাস্থ্যের আরও বেশী ক্ষতি সম্পন্ন হতে পারে এই বিষয়ে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে নকল ঔষধ বেচাকেনার মত বড় ধরনের সমস্যা । মানুষ দেখা যাচ্ছে এজিথ্রোমাইসনের মত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক গ্রহন করার পরও আশানুরুপ রোগ মুক্তি পাচ্ছেনা । এর পেছনে এন্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার মত কারণও থাকতে পারে তবে ঔষধ নকল হচ্ছে এ বিষয়টি অনেক ডাক্তারও নিশ্চিত করেছেন । ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রচারিত কয়েকটি প্রতিবেদনেও এ ব্যপারে গুরুত্ব সহকারে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে । ।িএর
শুধু কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করলেই হবেনা তদারকি আরও বাড়াতে হবে নইলে ভেজাল ঔষধের এই দৌরাত্ব বন্ধ করা যাবেনা । মানুষ এখনও ডাক্তার, ঔষধ আর চিকিৎসার উপর বিশ্বাস করেই ভার মুক্ত থাকে অনেক । তারা মনে করে চিকিৎসা সেবাই মানুষকে জীবনের নিরাপত্তা দেয় সর্বক্ষেত্রে ।এ্ কারনে চিকিৎসার জায়গাটিকে সবসময় আলাদা যত্ন দেওয়া প্রয়োজন । নকল ঔষধ বন্ধে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে । এখানে বড় ভূমিকা রাখেতে পারে মোবাইল ফোনের ম্যাসেজ অপশনটিই । কোন কোম্পানি যে ঔষধ বের করবে তার ব্যাচ নাম্বারের সাথে একটি গোপন নম্বর রেখে ঔষধের গাঁয়ে একটি নম্বর দিয়ে দেবে এবং যখন ক্রেতা ঔষধটি কিনবে এবং ঐ নম্বরটি লিখে কোম্পানিকে এসএমএস করবে তখন উক্ত ঔষধের ব্যচ নম্বর, তৈরীর তারিখ ও ঐ গোপন নম্বরটি মিলে যাবে এবং ক্রেতা নিশ্চিত হবে এটাই আসল কোম্পানির আসল ঔষধ ।
যদি দ্রুত ঔষধের নিরাপত্তার জন্য এরকম কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে পরবর্তি প্রজন্ম একটি ভয়াবহ স্বাস্থ ঝুকিতে পড়ে যেতে পারে । একদিনে অনেক কোম্পানি, নকল ঔষধ ও অন্যদিকে প্রচুর পরিমাণে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার ! সব মিলে এমন একটি ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে যেখানে দৃষ্টিতে না দেখা যাওয়া অনুজীবের কাছে মহা শক্তিশালী মানুষের অসহায় আত্ন সমর্পন ঘটতে পারে নির্দ্বিধায় !
ধণ্যবাদ বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসনকে সময়োপযোগী ব্যবস্থ্যা গ্রহনের জন্য । আশা করি ঔষধের দোকানগুলোতে ভেজাল কোম্পানি এবং ভেজাল ঔষধের লিষ্ট ঝুলিয়ে দেওয়া এবং এসএমসের মাধ্যমে আসল ঔষধ কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার পদ্ধতি নিয়ে ভেবে নতুন একটি পদক্ষেপ গ্রহন করে জনগনকে আরও সচেতন করার ব্যাপরেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।এ ব্যপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি । ঔষধ কেনার ক্ষেত্রে আপনিও সচেতন হোন । যখন কোন ঔষধ কিনছেন তখন সংশ্লিষ্ট সকল কিছু সঠিকভাবে দেখে নিন । উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ শেষের তারিখ, কোম্পানির সঠিক চিহ্ন ও সীল এবং দামের তারতম্য দেখে তারপর ঔষধ কিনুন । সবসময় চেষ্টা করুন ঔষধের লাইসেন্স পাওয়া ফার্মেসি থেকে ঔষধ কেনার । ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে যে ঔষধ লিখেছেন সেটাই দোকানিকে দিতে বলুন এবং অবশ্যই দোকানীর কাছ থেকে ক্রয়ের পর ভাউচার নিন ।সচেতন হোন নিরাপদ জীবন কাটান ।
Discussion about this post