প্রিয় পাঠক, মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে আপনাকে একটু স্বরণ করিয়ে দিচ্ছি আজকের উন্নত বিশ্বের একটি দেশ জাপানের কথা। যেদেশটির নিজস্ব কোন প্রাকৃতিক সম্পদ নেই। সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর একটি দেশ। বিদেশ থেকে কাচাঁমাল আমদানি করে তা বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত করে নানা দ্রব্য সামগ্রী তৈরি করে আবার বিদেশে পাঠাই। শুধু তাই নয় এই জাপানের শেয়ার মার্কেট মাঝেমাঝে আমেরিকার শেয়ার মার্কেটের সাথে পাল্লাা দিয়ে এগিয়ে থাকে। আর এসব সম্ভব হয়েছে তাদের একটি মাত্র সম্পদ কে কাজে লাগিয়ে। যার নাম “মানবসম্পদ”। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার পর দুমড়ে- মুচড়ে যাওয়া জাপানিরা আবার মাথাতুলে দাড়ানোর দৃঢ় শপথ নেয়। দেশের জনগনকে শিক্ষা তথা জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে মানবসম্পদে পরিণত করার রব উঠে চারদিকে। তাদের সেই প্রচেস্টায় সফলকাম হয়ে আজ ফল হিসেবে বিশ্বের একটি উন্নত দেশ। তাদের শিক্ষার হার ৯৯.০০%।
আমাদের বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল ছোট একটি দেশ। ষোল কোটি মানুষের পাশাপাশি রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান প্রাকৃতিক, খনিজ, জ্বলজ সম্পদ। তারপরেও খাদ্য , বস্ত্র, বাসস্থান , শিক্ষা ,চিকিৎসার মতো জীবনের অত্যাবশ্যকীয় অধিকার গুলো বাস্তবায়নের জন্য রাস্ট্রকে নানা প্রতিকূলতা ও চ্যালেন্জ মোকাবেলা করে ঠিকে থাকার আপ্রাণ চেস্টা করতে হচ্ছে। যার কারনে রাস্ট্রীয় সংবিধানে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে রাস্ট্রপরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি। কারন, এসব সার্বজনীন অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন নির্ভর করে মূলত: রাস্ট্রের সম্পদ ও অর্থনৈতিক অবস্থার উপর। উল্লেখিত অধিকার সমূহ মানুষের স্বাভাবিক আত্ববিকাশের জন্য তথা রাস্ট্রের সার্বিক উন্নতির জন্য আবশ্যমাবী এবং কোনটি অগ্রাহ্য করা যায় না। আমি শুধুমাত্র “শিক্ষার অধিকার” নিয়ে আপনাদের কিছু কথা শেয়ার চাই। এটি এমন একটি অলঙ্গণীয় অধিকার যা অন্যান্য সকল অধিকারের সূতিকাগার। দেশের মানুষকে অশিক্ষিত রেখে তাদেরকে অন্যান্য হাজারো মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিলেও তাদের কাছে উক্ত অধিকার সমূহ মূল্যহীন থেকে যাবে। সেগুলোর আলোকে নিজেকে বিকশিত করার মানসিকতা ও সামর্থ্য কোনটাই তাদের মাঝে থাকে না। কারণ একজন মানুষ শিক্ষিত হলেই তার সুপ্ত মনোদৈহিক শক্তিগুলো জাগ্রত হয়ে সক্ষমতাগুলো বিকশিত হয়ে উঠে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সে তার নিজের প্রতি, সমাজের তথা রাস্ট্রের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পের্কে অবগত হয় এবং বিবেকের তাড়নায় তা পালনে সর্বোচ্চ সচেষ্ট হয়। অন্যদিকে একজন মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বিচ্যুত হওয়া মানে পঙ্গুত্ব বরণ করে নেয়া। আত্ববিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে জ্ঞান ও বিবেকহীন প্রাণীর মত লক্ষ্যহীনভাবে বেড়ে উঠে। যার ফলে তার শিক্ষাহীন জীবন থেকে দেশ সমাজ কাঙ্ক্ষিত ফলস্বরুপ কিছুই পায় না। সহজ কথায় বলতে গেলে যে মানুষ নিজে আলো দেখে না, সে কখনোই আরেকজন কে আলো দেখাতে পারে না। অশিক্ষিত মানুষ নিজের জীবনকেও সামান্যতম বিকশিত করার প্রয়াস পায় না ; নিজে দেশ ও সমাজের জন্য বোঝা হলেও সে উপলব্ধি তার মাঝে থাকে না। ফলশ্রুতিতে সে যখন পিতা-মাতা হয় তখন নিজের সীমাবদ্ধতার কারণে আরও একটি প্রজন্ম কে অন্ধকার জগতে ঠেলে দেয়। বাড়তে থাকে জনসংখ্যা , জনসমস্যা , জনবিশৃঙ্খলা। এক কথায়, অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী একটি দেশ ও জাতির জন্য জগদ্দল পাথরের ন্যায় বোঝা, সম্পদ নয়। সেজন্য জাতির উন্নয়নে শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই প্রথমিক শিক্ষা কে করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে খাদ্য কর্মসূচী, নানারকম বৃত্তি প্রদান সহ বিভিন্ন প্রণোদনা ও প্রেষণা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রাথমিক শিক্ষার মানউন্নয়নে। মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত বিনা মূল্যে বই বিতরণ ও উপবৃত্তি প্রদান করে আসছে। তারপরেও প্রায় ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে। বাকী সব শিক্ষার্থী পড়াশোনা চালিয়ে যায় নিজ উদ্যেগে। প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী এইস.এস.সি পরীক্ষা শেষে উন্মুখ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য। রাস্ট্রীয়ভাবে যে কটা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল এই বিপুল সংখ্যক চাহিদা মেটাতে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত আসনের বিপরীতে এক ঘন্টার ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বহুগুণ। চেয়ার একটি কিন্তু দাবী অনেকের। এসব জেনেও অনেকটা ভাগ্য অন্বেষণের মত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। কারণ পড়ার খরচ থেকে শুরু করে থাকা খাওয়া সবই সস্তা এবং চাকরী ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটের মূল্যায়ন। আর বাদ বাকী শিক্ষার্থীদের অনিচ্ছাকৃত ভাবে বাধ্য হয়ে ভর্তি হতে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীভুক্ত কলেজ সমূহে। তাও গুটি কয়েকটা বিষয়ে। যে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরুর পর থেকেই নানা সমালোচনা, নানা জটিলতা, ও দুর্নীতির তকমা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। স্বভাবতই প্রশ্ন থেকে যায় পাচঁ- সাত বছর পর অর্জিত শিক্ষার মান নিয়ে।
আর জনগনের অর্থে চালিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী সবাইকে শিক্ষাদান করতে না পারলেও। যারা সুযোগ পাচ্ছে তাদেরকেও গভেষণামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান থেকে শুরু করে পড়াশোনার সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দিতে বারবার ব্যর্থ। অপরাজনীতির চর্চা, গ্রুপিং, মারামারি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ছাত্র খুন, শ্লীলতাহানী, ধর্মঘট প্রভৃতি বছর জুড়েই সংবাদের শিরোনামে আসছে। ঘটনার পরপরই তথাকথিত তদন্ত কমিটি গঠন , হল ত্যাগের নির্দেশ আর অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকার কেউ কিছুই করতে পারে নি।
অপরদিকে, উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে ; মূলত রাস্ট্রের ব্যর্থতা এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারের সম্মতিক্রমে দেশে বেসরকারি উদ্যেগে গড়ে উঠেছে প্রায় আশিটা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে প্রায় পাচঁ লাখের মতো শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতেছে সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে। ইতেমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ থেকে পাশকৃত গ্র্যাজুয়েটগণ দেশ বিদেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত হয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা তথা জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। নিঃসন্দেহ প্রতিবছর দেশের ক্রমবর্ধমান উচ্চ শিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এভাবেই সরকারি-বেসরকারি উদ্যেগ ও সহযোগীতায় জাতির চালিকাশক্তি শিক্ষা কে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাবে ; উন্নতির সোপনে আরোহন করবে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার বাংলাদেশ
মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির মেরুদন্ড ঠিক রেখে পৃথবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াবে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় “শিক্ষায় জাতির মেরুদন্ড ” এই অপ্তবাক্যের কথা সবাই জানলেও আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে মনে হয় জানা নেই। নয়তো তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন। আর যদি তিনি জানতেন অথবা ভুলে না যেতেন তাহলে তিনি (সরকার) কখনোই উচ্চ শিক্ষায় ভ্যাট আরোপ করতেন না। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের উপর ৭.৫০% কর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপ করা হয়েছে। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী তা ১০% প্রস্তাব করেছিলেন। বাজেট শুনানিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে তা ২.৫০% কমে ৭.৫০% করা হয়। এতে উচ্চ শিক্ষায় বাড়তি খরচ বহন করতে হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিবাবকদের। যার সিংহ ভাগ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। যাদের অভিবাবকগণ শত কস্ট দৈন্য দশা সহ্য করে শুধুমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তুা করে সেমিস্টার খরচ প্রদান করেন সংসারের অন্যান্য খরচ কমিয়ে। আশায় বুক বাধেঁ সন্তান পরিবারের হাল ধরবে। গ্রাজুয়েশন শেষ করে একটা চাকরী পাবে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং চাকরী বাজারের এমন হাল দশা যে এস.এস.সি/এইস.এস.সি পাশ করার পর একটা দরোয়ানের / পিওন এর চাকরী কপালে জুটা বড় দায়। উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট থাকলে হয়তোবা একটা চাকরী পাওয়া যায়। সেটা নিতে গিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈরাজ্য আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেজনজট ও পড়াশোনার নিম্নমান উচ্চ শিক্ষার্থীদের কে বাধ্য করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হতে। মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত এই সিদ্বান্ত উন্নয়নশীল বাংলাদেশ এর শিক্ষা ব্যবস্থার উপর চরম চপেটাঘাত। গুটিকয়েক ধনী পরিবারের শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যের মাঝে সংখাগরিষ্ঠ নিম্নমধ্যবিত্তত পরিবারের শিক্ষার্থীদের সামর্থ্য গুলিয়ে ফেললেন। নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি আর সীমিত আয়ের যাতাঁকলে পিষ্ট একটি পরিবারের সন্তানকে বাড়তি কয়েক হাজার টাকার বোঝাটা অভিশাপ ছাড়া কিছুই নয়।
উচ্চ শিক্ষা কে উৎসাহিত ও সহজতর করে দেওয়ার জন্য উন্নত বিশ্বে (জাপান) শিক্ষা ঋণ, শিক্ষা বৃত্তি, সহ নানা সরকারি বেসরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। যেটা বাংলাদেশ এ অপ্রতুল।
একদিকে জনগনের হাজার কোটি টাকা খরচ করে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েক হাজার উচ্চ শিক্ষার্থী পড়াশোনার সুযোগ পাবে। অন্যদিকে সম্পূর্ণ নিজ খরচে উচ্চ শিক্ষা নিতে গিয়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থী উল্টো রাস্ট্রকে কোন যুক্তিতে ভ্যাট দিবে তা আমার বোঝে আসে না। শিক্ষা কে পণ্য আর শিক্ষার্থীদের কে ক্রেতা বানিয়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপ চরম হাস্যকর, অযৌক্তিক ও অমানবিক সর্বোপরি মানবাধিকার লঙ্গন বটে।
রাস্ট্রযন্ত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের সার্বিক লাগাম টেনে ধরার জন্য University Grant Comission (UGC) এর প্রতিষ্ঠা করেছিল। যেটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে কার্যত দন্তহীন বাঘের পরিচয় দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির যুগোপযোগী সিদ্বান্তের অভাব, একের পর এক ব্যার্থতা আর অপারিণামদর্শিতার কারনে দিন দিন অনুপযোগী , নিম্নমানের নামসর্বস্ব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বেড়েই চলছে। রাঘব বোয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রতিষ্ঠাতা বা উদ্যোগক্তাদের তথাকথিত ট্রাস্টিবোর্ডের মুনাফা লিস্পা গত দশ বছরে ঠুনকো অযুহাতে সেমিস্টার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। আজ পর্যন্ত ইউজিসি কোন ন্যায্য সেমিস্টার ফিস বা চার বছরে কত টাকা নিতে পারবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তা নির্ধারণ করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মান ভেদে ক্যাটাগরি নির্ধারণ ও নির্দিষ্ট সময় পর পর তালিকার হালনাগাদ করতে পারেনি। যত্রতত্র ক্যাম্পাস স্থাপন ; এক -দুই তলা শপিং মল, তিনতলা জুতার ফ্যাক্টরি আর চার থেকে উপরের তলা ভার্সিটি ক্যাম্পাস! শুধু তাই নয় কিছু কিছু নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বাণিজ্যের সাথে জড়িত বলে মিডিয়া প্রকাশ করে। এরকম নানান দুর্নীতি ও অনিয়ম অবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে দেশের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়। তদুপরি শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনায় উপযুক্ত দক্ষ জনবল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার অভাব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের। মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্য যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের অভাব লেগেই থাকে বছরজুড়ে। এসব শিক্ষকদের ইউজিসি কর্তৃক বিভিন্ন প্যাকেজ ও কর্মশালার মাধ্যমে ট্রেনিং দেওয়ার পর নিয়োগ দিলে ফলাফলটা নি:সন্দেহে অভাবনীয় হতো । তারউপর খন্ডকালীন শিক্ষকদের টাকা কামানোর দৌরাত্ম্য। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ,প্রো-ভিসি, ট্রেজারার, রেজিস্টার সংকট রয়েছে। মোদ্দা কথা, উপযুক্ত সামান্য যত্ন নিলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ হতে পারত বিশ্বমানের মানুষ গড়ার কেন্দ্রস্থল। সরকারের উচিত আগে ইউজিসি কে কার্যকর শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত কয়েকদিন আগে খোদ নিজেই বলেছেন ; “দুর্নীতির কারণে দেশের ক্ষতি ৪৫ হাজার কোটি টাকা” ! জাতীয় বাজেট অর্থ পূরণের জন্য রাস্ট্রযন্ত্রের উচিত আগে দুর্নীতি রোধ করে ঐ টাকা গুলো উদ্বার করা। উচ্চ শিক্ষার উপর কর বসিয়ে নয়। জাতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়ে নয়।
বাংলাদেশের মত বিশাল অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী কে মানবসম্পদে পরিণত করে জাতির উন্নয়ন সম্ভব হবে না, যদি ” শিক্ষা ” কে মৌলিক অধিকার হিসেবে মর্যাদা দেওয়া না হয়। “শিক্ষা “কে সবার জন্য উন্মুক্ত ও সহজলভ্য করে দেওয়া না হয়।
লেখকঃ এম আর ওয়াজেদ চৌধুরী (রায়হান)
মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষার্থী
আইন বিভাগ (চতুর্থ বর্ষ)
আইআইইউসি।
Discussion about this post