জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি, প্রো ভিসি ও কোষাধ্যক্ষসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার পুনরায় তদন্তের জন্য বিচারিক আদালতের নির্দেশ বহাল রখেছেন হাইকোর্ট।
এ আদেশের ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মামলার পুনরায় তদন্ত চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী। রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিথ বেঞ্চ এ রায় দেন।
মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক দুই ভিসি কাজী শহিদুল্লাহ ও মোফাখখারুল ইসলাম, সাবেক প্রো ভিসি তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমদ, ফাহিমা সুলতানা, দিলরুবা বেগম, এইচ এম তায়েহীদজামাল, মো. সিদ্দিকুর রহমান, মোল্লা মাহফুজ আল হোসাইন, শেখ মুহাম্মদ মোফাজুলহোসাইন, রিফাত আরা রত্না, মো. নূর রহমান ও মো. শহিদুর রহমান।
আদলতে বাদি প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেহান হোসেন। তাকে সহযোগিতা করেন, অ্যাডভোকেট আসমা আক্তার ও মোহাম্মদ ইমাম হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। এছাড়াও আসামিদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, অ্যাডভোকেট এ এস এম আব্দুল মোবিন।
আইনজীবী রেহান বলেন, ২০১২ সালের ৭ জুলাই জয়দেবপুর থানায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মো. হাফিজুর রহমান ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় অবৈধভাবে সাজাপ্রাপ্তদের বেতন-ভাতা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় এ মামলায় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে ১৩ আসামির সবাইকে অভিযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়। পরে এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গাজিপুর জেলা জজ আদালতে না রাজির আবেদন করেন বাদি হাফিজুর রহমান।
২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালত এ আবেদন গ্রহণ করে দুদককে তা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টের আবেদন করেন কাজী শহিদুল্লাহ, মোফাখখারুল ইসলাম, তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী ও কাজী ফারুক আহমদ।
হাইকোর্ট ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৮ জুন রুল জারিসহ তদন্ত কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। এরপর আজ চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের আদেশের ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে পুনরায় যে তদন্ত চলছিল সেটি চলতে আইনি কোনো বাধা নেই বলে জানান আইনজীবী রেহান হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ১২০০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। এ গণনিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে সে সময় হাইকোর্টে রিট করলে তা বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়ে জালিয়াতির এক মামলায় সংশ্লিষ্টদের সাজা হয়।
কিন্তু সাজাপ্রাপ্তদের চাকরি থেকে বরখাস্ত না করে পারস্পরিক যোগসাজশে নিয়মিত বেতন-ভাতা দিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এভাবে প্রায় ৬ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকে হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
Discussion about this post