বিডি ল নিউজঃ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে আজ বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। হাইকোর্ট ও ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের সবগুলো ফটকে পুলিশ ও র্যাব অবস্থান নিয়েছে। ভেতরে প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি তল্লাশিও করা হচ্ছে।
নিজামীকে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বুধবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার দশম রায় এটি। আগের নয়টি মামলায় জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আটজন এবং বিএনপির দুই নেতাকে দণ্ডাদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এর আগে গত ২৪ জুন অসুস্থতার কারণে নিজামীকে আদালতে হাজির না করায় রায় ঘোষণা করেনি ট্রাইব্যুনাল।
গত ২৪ মার্চ নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখে ট্রাইব্যুনাল। নিজামীর মামলাটি একমাত্র মামলা যেটি তিনবার রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে।
নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ২৮ মে তার বিচার শুরু হয়।
নিজামীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট থেকে গত বছরের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদসহ মোট ২৬ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাফাই সাক্ষ্য দেন ৪ জন। এরা হলেন—নিজামীর ছেলে মো. নাজিবুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট কে এ হামিদুর রহমান, মো. শামসুল আলম ও আবদুস সলাম মুকুল।
গত বছর ১৩ নভেম্বর নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে মামলাটি যেকোনো দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রেখেছিল ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল। এরপর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসর যান তিনি। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান পদে সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
নতুন চেয়ারম্যান নিজামীর মামলায় নতুন করে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন। সে অনুয়ায়ী এ মামলায় পুনরায় যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে একটি মামলায় গ্রেফতার করার পর একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপর ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর জামায়াতের আমিরের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করে প্রসিকিউশন। ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
Discussion about this post