পাবনার ঈশ্বরদীতে দেড় মাসের একটি শিশুকে হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রাখার অভিযোগে বাবা ও দাদাসহ চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আতিকা জান্নাত নামে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। সহকারী পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) মো.জহুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আটককৃতরা হলো-মৃত শিশুর বাবা ঈশ্বরদী উপজেলার অরনকোলা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম খান (৩৩), দাদা আইয়ুব আলী খান (৭২), দাদি সেলিনা খান (৬৮) ও আশরাফুলের মামি গোপালগঞ্জের উলপুর গ্রামের জোৎস্না খাতুন (৫৭)।তিনি বলেন,পর পর মেয়ে সন্তান হওয়ায় ও শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেওয়ায় শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. জহুরুল হক আরও জানান,‘শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঈশ্বরদী পৌর সদরের কলেজ রোডে আশরাফুল ইসলাম খানের বাড়ি থেকে তার দেড় মাসের শিশু কন্যা আতিকা নিখোঁজ হয়। শিশুটিকে কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে বলে তারা পুলিশকে জানায়।সন্ধ্যায় বিষয়টি তদন্তে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)গৌতম কুমার বিশ্বাস ঘটনাস্থলে যান। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ একটি গোপন সংবাদ পায়। এর ভিত্তিতে বাড়ির শয়ন কক্ষের আলমারির ভেতর থেকে কাপড়ে পেঁচানো অবস্থায় ওই শিশুর মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জনকে আটক করা হয়।
আতিকা জান্নাতের মা নিশি খাতুন জানান,‘তিনি মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে বেলা ১১টার দিকে বাড়ির ছাদে কাপড় শুকাতে যান। এসে দেখেন তার মেয়ে বিছানায় নেই।তার স্বামী আশরাফুলের দাবি তিনি তার মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
সহকারী পুলিশ সুপার জহুরুল হক জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা প্রাথমিকভাবে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার কারণ হিসেবে তারা জানায় আশরাফুলের এক বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর শারীরিক ত্রুটি নিয়ে আরেকটি মেয়ে হওয়ায় এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি ছিল। এ কারণে শিশুটিকে শ্বাসরোধে করে হত্যা পর কাপড়ে পেঁচিয়ে লাশ শয়ন কক্ষের আলমারীর মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন তারা।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন জানান, রবিবার সকালে শিশুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আটককৃতদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Discussion about this post