সাইফুল,পটিয়া প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়ম দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে রোগীরা সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন। জানা যায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শিশির কুমার রায় যোগদান করার পর থেকে হাসপাতালে অনিয়ম ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। রোগীদের সপ্তাহে ৩ দিন মাছ, ৩ দিন মুরগী মাংস, ১ দিন খাসীর মাংস দেয়ার নিয়ম থাকলেও প্রতিদিন রোগীদের সস্তা মূল্যের বয়লার মুরগী দিয়ে খাবার দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঠিকাদারের কাছে খাবারের ব্যাপারে কোন আপত্তি করেন না বলে জানা গেছে। গত ২০ মে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৪টি টিনের পানি ট্যাংক টেন্ডার ছাড়া বিক্রয় করে দেন তিনি। হাসপাতালে অডিট টিম আসাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের ৩৯টি ইউটিনের স্টাফ থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা চাঁদাবাজি করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিজন থেকে আড়াই হাজার টাকা থেকে বিশ(২০) হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদাবাজি করে বলে সূত্র জানায়। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ দুলাল প্রসাদ ভট্টাচার্য্য জানান, অডিটের কথা বলে তার থেকে ডাঃ শিশির বাবু ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। ডাঃ আইয়ুব নবী জানান তার থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নাছির উদ্দীন জানান তার থেকে অডিটের কথা বলে দুই হাজার টাকা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আদায় করেছে। বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত আপত্তির কথা তুলে এ টাকা আদায় করে বলে জানা যায়। তবে বিদ্যুৎ বিল সম্পর্কে ডাঃ দুলাল প্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, তিনি দায়িত্বে থাকাকালে ১৯৮২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বকেয়া ২৭ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছেন। সুতরাং বর্তমানে কোন প্রকার আপত্তি থাকার কথা নয়। এ ব্যাপারে ডাঃ শিশির কুমার রায় থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন স্টাফ থেকে অডিটের ব্যাপারে তিনি কোন টাকা নেননি। বছরে ২৪ লাখ টাকার ওষুধ এ হাসপাতালে সরকারীভাবে সরবরাহ পাওয়ার কথা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শিশির কুমার রায় স্বীকার করলেও রোগীদের অভিযোগ তারা কোন ওষুধ ফ্রি পায় না। একটি ক্যাপসুল থেকে শুরু করে সব ধরনের ওষুধ বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হয়। চলতি গ্রীস্মের তীব্র তাপদাহে পেটের পিড়া, ডায়রিয়া, আমাশয় রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও কোন রোগীকে একটি নরমেল স্যালাইনও ফ্রি দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালে সরকারী ভাবে স্যালাইন সরবরাহ না থাকায় স্যালাইন ফ্রি দেয়া সম্ভব হয় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শিশির কুমার রায় চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকাকালে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে স্থানীয় এম.পি’র সুপারিশে কর্তৃপক্ষ তাকে বদলী করেন। এরপর বিভিন্ন তদবির চালিয়ে তিনি পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। বর্তমানে পটিয়ায় তার দুর্নীতির কারণে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীসহ রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ।
Discussion about this post