স্থানীয়রা জানান, এ বাজারে নড়াইলের বাহেরগ্রাম, ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা, যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাঠি, আলতাপোল, রামকৃষ্ণপুর, বাওশলা, পাঁচপোতা, কেদারপুর, সদর উপজেলার রূপদিয়া, বসুন্দিয়া, প্রেমবাগ ও বাঘারপাড়া এলাকায় কৃষকের ক্ষেতে উৎপাদিত আখ এ বাজারে বিক্রি করা হয়। আর এসব আখ কিনতে খুলনা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, কয়রা, চাঁদখালী, মংলা, ফয়লা, চুলকাঠি, দিগরাজ, পিরোজপুর, বরিশালের বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা আখ কিনতে এখানে আসেন।
বাদুড়িয়া আখ বাজারের ব্যবসায়ী আহম্মেদ আলী সরদার জানান, কেশবপুরের মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বাদুড়িয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কৃষকের ক্ষেতে উৎপাদিত আখ কেনাবেচার জন্য ১৯৯১ সালে বাদুড়িয়া মোড়ে ছোট দুইটি আড়ৎ খোলা হয়। তবে, অল্প দিনের ব্যবধানে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে এই হাটের পরিচিতি পায়। একপর্যায়ে যশোর জেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলায় চাষিরা আখ কেনাবেচার জন্য বাদুড়িয়া মোড়কে বেছে নেয়।
তেমনি, দূর-দূরন্তের ক্রেতারাও আখ কিনতে এখানে আসতে থাকেন। ফলে আস্তে আস্তে এই বাজারে আড়তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।
তিনি আরও জানান, দেশের অধিকাংশ পাইকারি বাজারে মালামাল লোড-আনলোডের সময় হ্যান্ডেলিং শ্রমিকদের নামে চাঁদাবাজি হয়। তবে এখানে ওই ধরনের চাঁদাবাজি চক্র নেই। ক্রেতারা আখ কিনে নিজেরাও গাড়িতে লোড করতে পারেন। কেউ কেউ মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিয়েও লোড করাতে পারেন। আড়ৎ মালিকরা চাষিদের কাছ থেকে প্রতি হাজার আখে ৩০০ টাকা হারে কমিশন নিয়ে বেচাকেনার ব্যবস্থা করে। এই সামান্য কমিশনের টাকা থেকে আড়ৎ মালিকরা বাজার ইজারাদারের টোলের টাকাও পরিশোধ করেন। ফলে সম্পূর্ণ হয়রানিমুক্ত পরিবেশে ক্রেতা-বিক্রেতারা আখের কেনা-বেচা করতে পারেন।
বাদুড়িয়ার আখের আড়ৎ ব্যবসায়ী রশিদ বাবর আলী, টিটো, ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আখের এই বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগমনকে কেন্দ্র করে কয়েকটি চা-সিগারেট আর সকালের নাস্তার জন্য হোটেল গড়ে উঠেছে। তবে, এখানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এমনকি, আশপাশের এলাকার ক্ষেতে উৎপাদিত একমাত্র রাস্তাটিও পাকা হয়নি। বৃষ্টি হলেই চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের।
আড়ৎ ব্যবসায়ীরা জানান, বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে গাড়িতে এখানে আখ আসে। কিন্তু বাজারে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অন্ধকারে আখ আনলোড করতে খুবই কষ্ট হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ ও রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান তারা।
মংলার ফয়লা থেকে আখ কিনতে আসা রফিক উদ্দিন বলেন, ভালো মানের আখ ন্যায্য দামে কিনতে পারায় তিনিসহ ওই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আখ কিনতে বাদুড়িয়া বাজারে আসেন।
পিরোজপুর থেকে আসা আখ ক্রেতা মুজিবর রহমান ও সিদ্দিকুর বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে এখান থেকে আখ কিনে পিরোজপুর অঞ্চলে ব্যবসা করেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আখের দাম কিছুটা বাড়তি।
Discussion about this post