হাজার হাজার মানুষের চিঠি। রাস্তায় প্রতিবাদ। লবিং। এসব সফল করে অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী রসায়নবিদ সৈয়দ আহমেদ জামাল। গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ১০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের প্লাট্টি কাউন্টি কারাগার থেকে মুক্তি পান বিতাড়নের মুখে থাকা কানসাসের এই বাসিন্দা।
জামালের মুক্তির বিষয়টি এত দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে যে তাঁকে স্বাগত জানাতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তখনো কারাগারে পৌঁছাতে পারেননি। এক হাতে বই, আরেক হাতে কমলা রঙের একটি ব্যাগ নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসতেই আলোকচিত্র সাংবাদিকদের ক্যামেরাগুলো সচল হয়ে ওঠে। এর কয়েক মিনিট পরই পরিবারের সদস্যরাও সেখানে পৌঁছান।
মুক্তির পর জামালের প্রথম মন্তব্য, ‘এটা ছিল কঠিন পরিস্থিতি’। তবে এ সময় তাঁকে স্বচ্ছন্দ ও আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল।
স্বামীর মুক্তির জন্য এত দিন লড়াই করে আসা হাজার হাজার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জামালের স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা জয়নব চৌধুরী। তিনি বলেন, অসংখ্য মানুষকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ গোটা সম্প্রদায়কে।
আপাতত কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও যুক্তরাষ্ট্রে জামালের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। তাঁর কৌঁসুলি রেখা শর্মা-ক্রফোর্ড বলেছেন, আদালতের আদেশে তিনি কৃতজ্ঞ। তবে তিনি বলেন, জামালকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হলে সামনে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। জামালের তিন সন্তানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি এই বাচ্চাগুলোকে তাঁর বাবাকে দেশেই (যুক্তরাষ্ট্র) রেখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
আদালতে সহকারী অ্যাটর্নি জেফ রেইয়ের যুক্তি ছিল, জামালকে বহিষ্কারের ‘যৌক্তিক কারণ’ আছে। এটা তাঁকে কারাগারে রাখারও প্রধান কারণ। ডিস্ট্রিক্ট জজ রোসিয়ান কেচমার্ক এই যুক্তি গ্রহণ করেন। তবে তিনি জানতে চান, আবেদনকারীকে মুক্তির আদেশ দেওয়ার মধ্যে ক্ষতিটা কোথায়? যদি আবেদনকারী তাঁর পরিবারের জিম্মায় থাকেন এবং তাঁকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আর কাগজপত্রহীন ব্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠানোর যে ধারা তৈরি হয়েছে, সেখানে একজনের বহিষ্কার ঠেকাতে এতটা উদ্যোগ দেখা যায়নি, যতটা দেখা গেছে সৈয়দ জামালের বেলায়।
Discussion about this post