সভ্যতার বিকাশ কখন শুরু হয়েছিল ? যদি শুরু থেকে বলা যায় তবে বলতে হয় যখন সঠিকভাবে সামাজিকভাবে মানুষগুলো একসাথে থাকতে শিখেছিল তখনই সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়েছিল । যখন মানুষ সামাজিক হল তখন মানুষ নিজের লজ্জাস্থান ঢাকার প্রয়োজনীয়তা বেশী করে অনুভব করলো, যখন মানুষ সামাজিক হল তখন মানুষ লেনদেনের ক্ষেত্রে মুদ্রার প্রচলন ঘটালো, যখন মানুষ সভ্য হল তখন মানুষ বুঝতে শিখলো আমরা সবাই মানুষ আমাদের একসাথে থাকতে হবে, একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে হবে, পরিবার গঠন করতে হবে । সভ্যতা যখন একটি স্তরে এসে পৌছুলো তখন দেখা যাচ্ছে এই সভ্যতার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে কিছু অসভ্য আচরণ জনিত অসভ্যতা । খুব খেয়াল করে দেখবেন ইদানিং ডিভোর্সের সংখ্যা আনুপাতিক হারে বেড়েই চলেছে । মানুষের নাকি ঘরের মানুষের সাথে বনিবনা হয় না । গত কয়েকদিন আগে এই ডিভোর্স সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আমার ছোট এক ভাই ওয়েস্টার্ন কান্ট্রির তার এক বন্ধুর কথা বলছিল । তার সেই বন্ধুটি একদিন রাতে ঘরে ফিরলো এবং স্ত্রীও ঘরে ফিরল । ঘরে ফেরার পর দেখলো স্ত্রীর বিছানার চাদর পছন্দ হচ্ছে না । স্বামী জিজ্ঞেস করলো এই তুমি মন খারাপ করে আছো কেন ? স্ত্রী উত্তর দিল যে বিছানার চাদর তুমি বিছিয়েছো তা আমার ভালো লাগছেনা । স্বামী উত্তর দিল আমার কোন বিষয়টা তোমার ভালো লাগে ? স্ত্রী বললো আমি বুঝে গেছি এখন আমাদের সেপারেশন প্রয়োজন । এক রাতের সিদ্ধান্তে তারা আলাদা হয়ে গিয়েছিল ।
এরকমটা কিন্তু আমাদের দেশেও বর্তমানে চলে এসেছে । অনেকেই শুনি বলে এক জীবনে একজনকে নিয়ে কাটানো খুবই কষ্টের । তারমানে যে পরিবার প্রথা সভ্যতা এনে দিয়েছিল তা ভাঙ্গা শুরু হয়েছে !
হোক যার যার পরিবারের বিষয় আমি ধরে নিলাম যার যার । কিন্তু এই বিষয়গুলো কি আর যার যার থাকছে ? পরকিয়ার কারণে শিশু হত্যার চরম নৃশংসতা দেখতে বাধ্য হলাম আমরা ! এগুলোর বিচার যে একেবারে হচ্ছেনা তা কিন্তু নয় তবুও হত্যা থামানো যাচ্ছেনা তার মানে মানুষ নিজেকে দাঁড় করানোর জন্য শেষ পর্যন্ত সর্ব্বোচ্চ কঠোরতা দেখিয়ে ফেলছে !
এখন আসুন সেই সভ্যতার কথায় ফিরি । কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে বাসে কিছু মানুষ নাকি নারীদের জামা ব্লেড দিয়ে কেটে দিচ্ছে ! ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া খবরটি প্রথম প্রথম চোখ এড়িয়ে গেলেও এখন কিন্তু ভাবতে আমাদের বাধ্য করছেই । কোন জায়গাটিতে আসলে সমস্যা ? এটা কি ধরনের সমস্যা হতে পারে ? মানুষিক রোগ বলবেন, নাকি বলবেন বখে যাওয়া ? মানুষিক রোগই যদি হবে তবে কেন একসাথে অনেক জন করে যাচ্ছে খারাপ কাজগুলো !
বখে যাওয়াই বা যদি হবে তবে এরা সামাজিক জীব হিসেবে স্বীকৃতি পেল কার কাছ থেকে । এই ঘটনাটি আমার কাছে মনে হয়েছে খুব সচেতন ভাবে আবার অসভ্যতায় গমনের একটি পদচারনার মত । যেখানে একজন মানুষ রাস্তায় চলতে গেলে তাকে অপদস্থ করার জন্য কিছু মানুষ লেগে থাকে তার মানে দাঁড়াচ্ছে
সাধারণ মানুষগুলো একটা পাগল আর বখাটেরা হচ্ছে পাগলের পেছনে পেছনে ঢিল ছুড়ে মারা রাস্তার অমানুষগুলো !
গতকাল জঘন্যতম খারাপ কাজটি করতে গিয়ে জনসাধারণের হাতে একজন ধরা পড়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে । এই ব্যক্তিটির মাধ্যমে এই জঘন্য তম অপরাধীদের মুখ উন্মোচন হবে জাতির সামনে এটাই আশা করি আমরা । সভ্য সমাজ নামক উন্নয়নের বিশ্বে এমন আচরণ কারীরা শুধু পরিবারেরই নয় সারা দেশের জন্য একটা কীট হিসেবে তৈরী করে ফেলছে নিজেদেরকে । মানুষকে ভালোবাসার মন্ত্র যদি এদের বাবা মায়েরা কোন দিন এদের শুনিয়ে থাকে তবে এই বখে যাওয়া স্বভাব আমাদের দেখতে হয়না ।পারিবারিক শিক্ষা জোড়দার করার পাশাপাশি শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল অপরাধ কমবে ।আমাদের এ বিষয়গুলো নিয়ে আরও বিস্তর ভাবা দরকার সভ্যতাকে তার জায়গায় সমুন্নত রাখতেই ।
Discussion about this post