ছিটমহলের বাসিন্দাদের বন্দী জীবন থেকে মুক্তির লক্ষে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়েই এর বিলুপ্তি ঘটবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের ১৬২টি ছিটমহলের মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯২ সালে ভারতে দীপিক সেনগুপ্ত নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে গঠিত হয় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি।
প্রথমদিকে ভারতের ভিতরে এর কার্যক্রম চলতে থাকে। একপর্যায়ে ভারত ইউনিটের নেতা দীপিক সেনগুপ্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ছিটমহলের মানুষকেও তাদের সংগ্রামে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিট গঠন করা হয়। এর সভাপতি হন মঈনুল হক ও সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম মোস্তফা।
পরে বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলে এ আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলা কমিটিসহ প্রতিটি ছিটে কমিটি গড়ে তোলা হয়।
দীর্ঘ আন্দোলনের পর উভয় দেশের সরকার ও জনগণকে তাদের দাবি জানাতে সক্ষম হন ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে গত ৭ মে ভারতের লোকসভায় পাশ হয় বহুল আলোচিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল।
পরে গত ৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিটমহল বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
সে অনুযায়ী ৩১ জুলাই রাত ১২টায় ১ মিনিটে ছিটমহলগুলো স্ব স্ব দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে মিলে যাবে।
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক জানান, দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দি জীবন থেকে মুক্তির আনন্দে রাত ১২টায় ১ মিনিটে উভয় দেশের ছিটমহলবাসীরা ৬৮টি মোববাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে ছিটমহলের বিজয় দিবস উদযাপন করবেন। তাই এখন ছিটমহলগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ।
Discussion about this post