এম মিছবাহ উদ্দিন বিডি ল নিউজ বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ নির্ধারিত দিনে পার্শ্ববর্তী মাঠে স্থানীয় আওয়ামীলীগ সমাবেশ আহবান করায় বিয়ানীবাজার উপজেলার দক্ষিণ মুড়িয়ায় ৩১ মার্চের দিনব্যাপী তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এর আগে ৩১মার্চের মাহফিল বাস্তবায়নের জন্য গত রোববার নির্ধারিত স্থানে প্যান্ডেল তৈরীর কাজ করতে গেলে দু’দফা পুলিশ উপস্থিত হয়ে মাহফিলের প্রস্তুতি নিতে আয়োজকদের বারণ করে বলে জানা যায়। হঠাৎ করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সমাবেশের অজুহাতে পূর্ব নির্ধারিত তাফসীর মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের সমাবেশ আহবান এবং এর প্রেক্ষিতে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে আয়োজক ও স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোব্ধ বলে জানা গেছে। উপজেলার মধ্যে চলতি বছরে সম্পন্ন হওয়া অসংখ্য দ্বীনি মাহফিলের মধ্যে কোন তাফসীর কিংবা ওয়াজ মাহফিলে প্রশাসন কর্তৃক বাধা দানের ঘটনা এটিই প্রথম। স্থানীয় সূত্র জানায়,এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সার্বিক সহযোগীতা ও পরামর্শে “দক্ষিণ মুড়িয়া তাফসীরুল কোরআন বাস্তবায়ন পরিষদ” ৩১ মার্চ মঙ্গলবার ১০নং মুড়িয়া ইউনিয়ন কমপ্লেক্স সংলগ্ন ষাইটশলা মাঠে দিনব্যাপী তাফসীরুল কোরআন মাহফিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। প্রচার ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৫/২০ দিন পূর্ব থেকে মুড়িয়া ইউনিয়নসহ বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার ও লিফলেট বিলি করে আসছেন তারা। ২৯ মার্চ রবিবার ভোর থেকে নির্ধারিত মাঠে মাহফিলের প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করেন ডেকোরেশন শ্রমিকরা। কাজ শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ প্যান্ডেল স্থলে গিয়ে ডেকোরেশন শ্রমিকদের প্যান্ডেল তৈরীর কাজ করতে বারণ করে। প্যান্ডেল শ্রমিকরা জানান, পুলিশ এসময় তাদের কাছে এ মাহফিলের আয়োজকদের নাম ও ঠিকানা জানতে চায়। তারা পরিচিত দু’একজনের নাম বললে পুলিশ ‘এখানে কোন মাহফিল হবে না’ বলে চলে আসে। স্থানীয়রা জানান,তখন পর্যন্ত মাহফিলের আশপাশ কোন এলাকায় কোন সংগঠনের উদ্যোগে সভা কিংবা সমাবেশ আহবান করেছে বলে কারো জানা ছিল না। মাহফিলের আগের দিন (গতকাল) সোমবার মুড়িয়া ইউনিয়নসহ পৌরসভায় মাইকিং করে জানানো হয় যে, ৩১মার্চ মুড়িয়া ইউনিয়ন কমপ্লেক্স সংলগ্ন মাঠে দেশব্যাপী বি.এন.পি জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হবে। এর কিছুক্ষন পরই প্রশাসন দক্ষিণ মুড়িয়া ও আশপাশ এলাকায় সকল ধরনের সভা-সমাবেশ ও তাফসীরের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একই দিন পাশাপাশি স্থানে দু’পক্ষ ভিন্ন প্রোগ্রাম আহবান করায় সংঘাত সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে। তাই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে এ স্থানে ৩১ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এদিকে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মাহফিল বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মাওঃ আব্দুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত কোরআনের মাহফিল শুনার জন্য এলাকার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। মুড়িয়া ইউনিয়নসহ গোটা উপজেলায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্বিঘেœ সম্পন্ন হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য তাফসীর ও ওয়াজ মাহফিল হয়েছে, কোথায়ও কোন ব্যক্তি কিংবা প্রশাসন বাধার গর্হিত নজির স্থাপন করেনি। কিন্তু এ অঞ্চলের ইসলাম বিরোধী মহলের প্ররোচণা ও চাপে প্রসাশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা উপজেলায় নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে। পরিষদের সেক্রটারী আব্দুল হামিদ ক্ষোব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, কোরআনের এরকম একটি মাহফিলে বাধা সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীনরা ও তাদের আজ্ঞাবহ প্রশাসন নির্লজ্জ, নিকৃষ্ট, ইসলাম বিদ্ধেষী কাজের নজির স্থাপন করলো। যা কোন মুসলমান মেনে নিতে পারেনি, এ দৃষ্টান্ত ধর্মপ্রাণ সকল মুসলমানদেরকে বিস্মিত করেছে। যে বা যারা এই গর্হিত কাজের সাথে প্রত্যক্ষ এবং
প্ররোক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে এর জন্য চরম খেসারত দিতে হবে বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন তিনি।
Discussion about this post