লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বালুরচর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম। জীবিকার তাগিদে ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় দিনমজুরের কাজ করেন তিনি। গত কয়েকদিন টানা বর্ষণে কাজ নেই বলে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার।
আবুল কাশেম বলেন, ‘কাম নাই খামু কি? আমি না হয় দিনে কোনো রকমে এক বেলা খেয়ে বেঁচে আছি আর বাড়িতে মা-বাপ, ছোট ছোট ভাই বোনেরা উপোস থাকছে। এরম বৃষ্টি হলে তো পরিবার নিয়া না খেয়ে মরা লাগব’।
আব্দুল গনি দৈনিক মজুরির বিনিময়ে কাজ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফেনীতে এসেছেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহে কাজ করেছেন মাত্র একদিন। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারে তার এক সপ্তাহ চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কখনো কম কখনোবা বেশি খেয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয় পরদিন কাজে যাওয়ার।
আবদুল গনির চোখে কান্নার আভাস। মুখে অসহায়ত্বের ছাপ। তিনি কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলেন, ‘বাড়িতে তো পোলা মাইয়ারা না খাইয়া আছে। আমার দিকে চাইয়া থাহে। এখান থেইকা কখন ট্যাকা পাঠামু। বৃষ্টিতে পথঘাট ডুইবা গেছে। মাঠে কাম (কাজ) নেই। এমুনি চললে কি করুম বলেন? না খাইয়া তো আর থাকন যায়না’।
ফেনী শহরের ট্রাংক রোড ও ছাগলনাইয়া পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব শ্রমিকের দৈনিক মজুরি আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ টাকা। টানা ভারি বর্ষণে ফসলের জমি ডুবে যাওয়ায় এসব শ্রমিকের চাহিদা নেই বললেই চলে।
সকাল হলে তারা একদিনের কাজের আসায় ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকেন শ্রমিকে কেনার বাজার-হাটে।
দু’একজন কাজ পেলেও অন্যদের চলে যেতে হয়। কাজ না পেয়ে তারা কাজের সন্ধানে ঘুরতে থাকেন পুরো দিন।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু মজুরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, খুলনা ও পঞ্চগড় থেকে কাজের উদ্দেশে এখানে এসেছেন। শুকনা মৌসুমে তাদের আয় রোজগার ভালো হয়। কিন্তু বর্ষা এলেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাদের।
Discussion about this post