রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় চিত্তরঞ্জন এভিনিউর মায়া কাটারা মার্কেটে অবৈধ দখলদারদের লাগানো মালিকানার সাইনবোর্ড ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও ঢাকার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রুলে মায়া কাটারা মার্কেট ব্যবসায়ীদের রক্ষায় কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং এ সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা জেলা প্রশাসক, ডিএমপি কমিশনার, ঢাকার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কোতোয়ালি থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অমিত দাশ গুপ্ত। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
পরে অমিত দাশ গুপ্ত জানান, মার্কেট দখল করার উদ্দেশ্যে লাগানো সাইনবোর্ড অপসারণের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
গত ৭ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি মার্কেট দখলে বেসরকারি সাইনবোর্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে আব্দুল আজিজ নামে এক সাংবাদিক হাইকোর্টে রিট করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় হাজার কোটি টাকা মূল্যের সরকারি সম্পত্তি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ওই সম্পত্তিতে মায়া কাটারা নামে গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজের একটি পাইকারি মার্কেট রয়েছে। সেখানে দোকানের সংখ্যা প্রায় তিনশ’।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় চক্রের সদস্যরা দোকানিদের জানিয়েছেন, মূল মালিক সাফায়াত গং মার্কেটটি বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী শাজাহান সিরাজ জুয়েলসহ কয়েকজন সেটি কিনেছেন। তারা এখন বহুতল শপিং কমপ্লেক্স তৈরি করবেন। নতুন মার্কেট তৈরি হলে দোকানিরা আকার অনুযায়ী তাদের দোকান বুঝে পাবেন।
এ ছাড়া এরই মধ্যে মার্কেটের উপরে বায়নাসূত্রে মালিকানার বিশাল সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় দোকানিরা পড়েছেন মহাবিপাকে।
তবে মার্কেটটি আসলে কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি। সরকারি সম্পত্তিতেই টাঙানো হয়েছে দখলের সাইনবোর্ড। ফলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা সেখানে চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন। এ নিয়ে কোনো কথা বলতে গেলে তাদের গুম-খুনেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
Discussion about this post