গত সপ্তাহের একটি খবর । কালের কন্ঠের আজকের শেষ পৃষ্ঠার সংবাদে হতাশার শেষ পৃষ্ঠে অবস্থান করেছি । পরকিয়ার কারণে স্বামী ও মেয়েকে হত্যার পর স্ত্রী পরকিয়া প্রেমিকের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে লাশের পাশে ! স্ত্রী ও পরকিয়া প্রেমিকের ফন্দি অনুযায়ী ডাকাতির পর ধর্ষন প্রমাণের জন্য তাদের এই কাজ করা !
ইসলাম ধর্মে শালীনতার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অনেক । শালীনতার যতগুলো শাব্দিক অর্থ আছে তার মধ্যে লজ্জাশীলতা অন্যতম । ভদ্র আচরণ, মানুষের সাথে সত্য বলার চর্চা এবং সামাজিকভাবে শুদ্ধ চলাচল সব কিছুই শালীনতার অন্তর্ভুক্ত হলেও লজ্জাশীলতা শালীনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট ।
শালীনতা অর্জনের জন্য লজ্জাশীলতা পরিপূরক বিষয়। লজ্জাশীলতা মানুষকে শালীন হতে সাহায্য করে। এ ব্যাপারে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, লজ্জাশীলতার পুরোটাই কল্যাণময়। (মুসলিম) অন্য এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন- লজ্জাশীলতা ইমানের একটি শাখা। (নাসাই)
রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্য এক হাদিসে বলেন, অশ্লীলতা যে কোনো জিনিসকে খারাপ করে। লজ্জাশীলতা যে কোনো জিনিসকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। (তিরমিজি)
আমরা ইসলাম মানি বলেই নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দেই । কিন্তু বর্তমান সময়ে আসলে কতটা পারছি আমরা ধর্ম অনুযায়ী চলতে ? দুর্নীতিকে নীতি বলে অন্যের লক্ষ লক্ষ টাকা নিজের করা থেকে শুরু করে ব্যভিচার পর্যন্ত কোথাও যেন কোন মেনে চলার বালাই নেই !শালীনতা শব্দটির বিচরণ শুধু বইয়ের পাতার মধ্যে আটকে থাকা একটি শব্দ যেন । কিন্তু এই শালীনতার সামান্য অংশ মানুষের মধ্যে থাকলে মানুষ কি আসলে এমন বিভৎস হয়ে উঠতে পারতো ?
দৃষ্টির একেবারে নিচু স্তরে গিয়ে যে কাজটি সেটাই পরকিয়া বলে ধরা যেতে পারে । ইসলাম পরিবার প্রথা এবং নারীর সম্মানকে এমনভাবে বিশ্লেষন করে যাতে কোন ধরনের অশান্তি সৃষ্টি হওয়ার কথা নয় । অবাধে যে কোন সময় যে কোন নারী যে কোন পুরুষের সংস্পর্শে আসলে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে পরিনয় সৃষ্টি হয়ে যাওয়া খুব বেশী প্রাকৃতিক কারণ । যখন আমি পরিবারের একজন সদস্য তখন আমাকে অন্যের প্রতি আকর্ষনকে স্তিমিত করার নামই নিজেকে শালীন ভাবে, লজ্জাশীল ভাবে উপস্থাপন করা । আমাদের চারিপাশের বেশীরভাগ মানুষ ইসলামকে ধারন করে ইবাদৎ করে যাচ্ছে কিন্তু যারাই উগ্রভাবে নিজেদের জীবনকে প্রবাহ মান করছে তারাই সম্পূর্ণ পথভ্রষ্ট হচ্ছে !
আসুন না মন থেকে সঠিকভাবে ধর্মের চর্চা বাড়াই । সন্তানদেরকে নীতি, শালীনতা, সত্যতা শিক্ষা দেই । সমাজের বিভৎস ঘটনাগুলো পূনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাইনা । সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠায় সম্মিলিত প্রয়াসের পাশাপাশি ধর্ম চর্চার গুরুত্বকে সঠিকভাবে প্রয়োগিক ক্ষেত্রে নিয়ে যেতে পারাটাই হতে পারে সব অনাচার বন্ধের সঠিক পদক্ষেপ ।
Discussion about this post