কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিক হোসেনের বাসায় ডাকাতির ঘটনায় শিক্ষক সমিতির ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থী পরিষদ।
রোববার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ মানববন্ধন করে। পরে তারা ২৩ জানুয়ারির মধ্যে ক্লাস পরীক্ষা চালুসহ ১১ দফা দাবি সম্বলিত উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। ২৩ জানুয়ারির মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু না হলে লাগাতার কর্মসূচি দেয়ারও ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।
স্মারক লিপিতে তারা উল্লেখ করে, শিক্ষকদের বাসায় যে ডাকাতি হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাই। কিন্তু এই কারণে যে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে আছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই অনতি বিলম্বে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা চালু করার আহবান জানাচ্ছি।
জানা যায়, গত বুধবার মধ্য রাতে কুমিল্লা শালবন বিহারের পূর্ব দিকে নাজির ভিলার ২য় তলায় ভাড়া বাসায় একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ তারিক হোসেনের বাসায় দুবৃর্ত্তরা হামলা করে বলে অভিযোগ উঠে।পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য,ট্রেজারারসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সরেজমিনে গিয়ে দেখে আসেন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কে যথাযত ব্যবস্থা নিতে বলেন।এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা না করায় বিশ্ববিদ্যলয় শিক্ষক সমিতি রোববার থেকে লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে।
এদিকে শিক্ষকের বাসায় দুর্বৃত্তদের ডাকাতির চেষ্টা ও শিক্ষক সমিতির ক্লাস বর্জনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ( একাংশ)।
ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষকদের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক জানতে চাওয়া হল শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরাও চাইনা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকুক। যখন আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই, তখন কিভাবে ক্লাসে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে জ্ঞান শেয়ার করবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক, তবেই আমরা ক্লাসে ফিরবো।’ এর আগের কোন ঘটনারও বিচার করেনি প্রশাসন’।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ওসি মোঃ নজরুল ইসলাম পিপিএম সাংবাদিকদের ব্রিফিং এ বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। যেহেতু ভিকটিম সুস্থ তাই তিনি নিজে মামলা করবেন। যেহেতু ঐ এলাকায় এর আগেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে তাই তিনি যদি মামলা করতেন বা আমাদের তথ্য দিতেন তাহলে আমরা দ্রুত কাজ করতে পারতাম। আর এ ঘটনা নিয়ে শিক্ষক সমিতি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের যে ঘোষণা দিয়েছে তা অযৌক্তিক। তবে শিক্ষকদের ইন্টারনাল কোন ঝামেলার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখলে সেটা অন্য ব্যাপার।’
জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আলী আশরাফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষকের বাসায় ডাকাতির ঘটনায় আমি কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তারপরও ঘটনার পরেই আমি, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সাথে সাথে পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তাদের অনুরোধ করেছি। মামলার বিষয়ে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি তারা আমাদের জানিয়েছে যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ঘটনা সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নয় ভিকটিম নিজেই মামলা করতে হবে।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির সাথে কথা বলে তাদেরকে ক্লাসে ফিরে আসার অনুরোধ করবো। কারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসের প্রাণ। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোও ক্রমান্বয়ে পূরণ করা হবে।’
Discussion about this post