মহাখালী বাস টার্মিনালে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর মাইকে ঘোষণা এলো, ভাই অনেক চেষ্টা করলাম আপনাদের জন্য। কিন্তু পারলাম না। কোনো গাড়ি (বাস) নেই। আমাদের কোনো গাড়ি আর যাবে না। আপনারা অন্য গাড়ি দেখেন।
প্রচণ্ড ভিড়ে ঘোষণাকারীর নাম জানা গেলো না। তবে তিনি শুধু বললেন, জ্যামের কারণে গাড়ির সিডিউল হেরফের হওয়ায় এখন সংকট দেখা দিয়েছে।
একই অবস্থা অন্য পরিবহনগুলোতেও। এ অবস্থায় সালামের মতো সব যাত্রীই যেন অসহায় হয়ে পড়লেন। এদিকে মাইকে ঘোষণার পর অনেকেই লোকাল বাসগুলোর দিকে ছুটলেন। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় গাড়ির সংখ্যা একেববারেই কম।
এদিকে সুযোগ বুঝে লোকাল বাসগুলো ভাড়া হাঁকাচ্ছে মন মতো। ঈদের আগের চেয়ে দ্বিগুণ-আড়াইগুণ ভাড়াই আদায় করছে তারা। আর উপায় না পেয়ে অসহায় মানুষগুলো সেভাবেই চেপে বসছেন। তবে এমন যাত্রীর সংখ্যা খুব কম। অধিকাংশ যাত্রীই এ বাস থেকে ও বাসে ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করছেন। যে কারণে টার্মিনালে মানুষের ভিড় কমছে না। ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে না কাটাতে পারার আশংকায় উদ্বিগ্ন যাত্রীরা এদিক ওদিক ঘোরা ফেরা করছেন। তবে অনেকে কিছুটা কম ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে উঠেই রওয়ানা হচ্ছেন।
হালুয়াঘাটের যাত্রী মো. সোবাহান জানান, সকাল থেকে এখনো গাড়িতেই উঠতে পারেননি। কখন বাড়ি যাবেন তা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাড়িই তো কম। ভাড়াও বেশি।’
নেত্রকোনার বাস সার্ভিস গ্রিন লাইন স্পেশাল সার্ভিসের চালক বাবুল জানান, জ্যামের কারণে সকাল পর্যন্ত গাড়িই তেমন আসেনি। এখনো অনেক গাড়ি ফেরেনি। তাই ভাড়া বেশি। আড়াইশ টাকার ভাড়া এখন ৭০০ টাকা হয়ে গেছে।
জামালপুরের রাজীব পরিবরহনের হেলপার নুরু বলেন, কাইলকে ঈদ। গাড়ি আর আইবো না। তাই আটশ ট্যাকা নিতাছি।
শেরপুরের যাত্রী মো. আবুল হোসেন। চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঈদ করতে যাবেন নকলায়। কিন্তু ভাড়া এতো বেশি যে তার কাছে তত টাকাই নেই।
তিনি বলেন, পাঁচ হাজার ট্যাকা নিয়ে যাইতাছি। কিন্তু যা ভাড়া তাতেই তিন হাজার ট্যাকা শেষ হইয়া যাইবো। তাই কম ভাড়ায় যাওনের টেরাই করতাইছি। এহন ট্যানশন লাগতাছে বাড়িতে ঈদ করতে পারুম তো!
Discussion about this post