অপরাধী হচ্ছে একটি দেশ তথা একটি জাতি বা সমাজের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা। বাধা বলছি একারণেই যে অপরাধীর অপরাধ প্রবণতা শুরু হয় তার সমাজ, জাতি এবং দেশের অভ্যন্তরেই যার ফলে সর্বপ্রথম তার অপরাধ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে তার দেশ,তার জাতি, ও তার সমাজ।
অপরাধী কে এবং কাকে বলে?
যে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা দেশ এমন কোনো কর্মকাণ্ড করলো যার কারনে অন্য কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান, দেশ তার ঐ কাজে দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো, এক কথায় সে ঐ সকল সামাজিক, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের বাহিরে গিয়ে কোনো কাজ করলেই তাকে অপরাধী বলা হয়।
অপরাধীর অপরাধ বিভিন্ন ভাবে হতে পারে এখানে অপরাধী শুধু একজন ব্যক্তি নয় কোনো প্রতিষ্ঠান এবং দেশ ও হতে পারে কারণ একটি প্রতিষ্ঠান ও দেশ ও আইনের বহির্ভূত কাজ করতে পারে তবে এই সব ক্ষেত্রে অপরাধের ব্যাখ্যা এবং অপরাধীর ধরনের ও পার্থক্য রয়েছে। তবে আমরা শুধু ব্যাক্তির অপরাধ নিয়ে আলোচনা করছি এখানে।
একজন ব্যক্তি কখনো জন্ম থেকে অপরাধী হয় না তবে যদি আমরা ক্রিমিনোলজির চর্চা করি সে ক্ষেত্রে দেখা যার ব্লাড রিলেশন এবং জাতি গত কিছু অপরাধীর ব্যাখ্যা তারা দিয়েছেন সমাজ ব্যবস্থা এবং বেড়ে ওঠার পরিবেশকেও তারা অপরাধী হয়ে ওঠার কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এছাড়া অপরাধী তার জন্ম সূত্রে নিজের মাঝের অপরাধীর ধারণ করে কিনা তা নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।
বিভিন্ন ধরনের অপরাধী এই সমাজের দেখা যায় এবং এক এক জনের অপরাধ করার ধরণ ও এক এক রকম, অনেকে স্বজ্ঞানে অপরাধ করে নিজের ইচ্ছায় এবং নিজের ভিতরে অপরাধী তৈরি করে বড় বড় অপরাধ করে।
ঐ দেশেই অপরাধ এবং অপরাধী সবচেয়ে বেশি হয় যেখানে আইনের প্রতিষ্ঠা দূর্বল এবং অপরাধ করার সুযোগ বেশি এ ছাড়া অপরাধ করেও যেখানে খুব সহজে বিচার ব্যবস্থা নরভরে এবং শাস্তি কম হওয়ার জন্য অপরাধী পার পেয়ে যাতে পারে । দেশ ভেদে অপরাধ যেমন ভিন্ন তেমনি অপরাধীর আচরণ এবং কর্মকাণ্ডেও ভিন্নতা দেখা যায়।
বাংলাদেশ এর অপরাধীঃ
বাংলাদেশ বহুল জনসংখ্যা সম্পন্ন ছোট একটি উন্নয়নশীল দেশ একটি দেশের জনসংখ্যা সেই দেশের যেমন সম্পদ তেমনি অতিরিক্ত জনসংখ্যার বৃদ্ধির জন্য অপরাধ এবং অপরাধী তৈরি হবার সম্ভাবনাও বেশি এবং উন্নতির পিছনে এই সকল অপরাধীর অপরাধ সব সময় বাধা হয়ে দাড়ায় এবং একজনের অপরাধ করে যখন পার পেয়ে যায় অন্যরা তখন ঐ ধরনের অপরাধে নিজেদের জড়াতে ভীত হয়না এবং এভাবে ধীরে ধীরে একটা সমাজে হাজারো নীরব অপরাধীর জন্ম হয়। উন্নয়নশীল দেশে অপরাধ করার সুযোগ বেশি করাণ অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থা স্বাধীন চলাচল এবং নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মানুষ যা ইচ্ছে তাই করতে থাকে এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বাংলাদেশের মানুষের আইন সম্পর্কিত ধারণা কম কিন্তু অপরাধ করে তা থেকে মুক্ত হয়ে আসার ধারণা বেশি, বেশি একারনেই এই ধরনের অপরাধীরা একটা শেল্টারে বড় হয় । উচ্চ পদস্থ ক্ষমতাধর কোনো ব্যক্তি যখন অপরাধ করতে থাকে তখন তার অধীনস্ত ছোট ছোট মানুষ গুলো অপরাধী হয়ে ওঠার সুযোগ পায় এবং পরোক্ষ সাপোর্ট থাকায় এইসকল অপরাধীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধিই পেতে থাকে। এভাবে আপরধীরদের বিশাল একটি বলয় তৈরি হয় এবং এরা এ দেশের একটা শ্রেণীকে নিজেদের স্বার্থে অপরাধী তৈরি করে এতে করে অনান্য সাধারণ মানুষ, সরকার এবং পুরো দেশের উন্নয়নে বাধা তৈরি হয়। এ দেশে যতোদিন না ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হবে ততোদিন পর্যন্ত অপরাধ এবং অপরাধী তৈরি বন্ধ করা সম্ভব হবেনা।
একটি মানুষ জন্মের পরে তার পরিবার এবং সমাজ তাকে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে সেখানেই তার আচরণ ভাবমূর্তি এবং চরিত্র গঠন হয় অপরাধী হয়ে ওঠার পেছনে তাই এই সকল বিষয় সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে। সুষ্ঠ পরিবার, সুষ্ঠ সমাজ, এবং সুষ্ঠ জাতি তথা আইনের প্রতি সম্মান এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রোধই পারে সমাজের অপরাধী তৈরি করা কমিয়ে দিতে।
মানুসিকভাবে বিপর্যস্ত অনেক মানুষই একটা সময় অনেক বড় অপরাধী হয়ে যায় যেমন বিভিন্ন সিরিয়াল কিলার ।তাই সম্পূর্ণ অপরাধী মুক্ত হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন আরো ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ এবং সামাজগত মানুষিক উন্নয়ন।অভাব, পরিবেশ, ভৌগোলিক অবস্থান, কুশিক্ষা এসব ও অপরাধী তৈরি করে তাই সচেতনতার বিকল্প আসলে কিছু নেই।
অপরাধী তৈরি না হলে অপরাধ ও হবেনা এটি মাথায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
Discussion about this post