নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে থেকে সাদা পোশাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
আজ সোমবার (১৬ এপ্রিল) সকালে সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টা খানেক পর ওই তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে রিকশা থেকে নামিয়ে একটি বড় মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী আরেক নেতা ও এক দোকান কর্মচারী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, তিনজনকে তুলে নেয়া হয়নি। তাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে। হয়তো এতক্ষণ চলেও গেছেন।
পরে বেলা পৌনে তিনটায় রাশেদের মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে তুলে নেয়া হয়। পরে আড়াইটার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, তার বাবাকেও থানায় নেয়া হয়েছে।
পরিষদের আরেক যুগ্ম আহবায়ক বিন ইয়ামিন ঘটনা সম্পর্কে জানান, সংবাদ সম্মেলন শেষে দুপুর পৌনে একটার দিকে তারা কয়েকজন দুপুরের খাবার খেতে রিকশায় করে চানখাঁরপুল যাচ্ছিলেন। রাশেদ, নুরুল্লাহ ও ফারুক এক রিকশায় ছিলেন। আর তিনি ছিলেন পেছনের রিকশায়। ওই তিনজনকে বহনকারী রিকশাটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশের ফটকের কাছে এলে পেছন থেকে তিনটি মোটরসাইকেল গিয়ে রিকশাটির সামনে গিয়ে গতিরোধ করে। পরে পেছন থেকে আরেকটি সাদা রঙের হাইএস মডেলের মাইক্রোবাস এসে সেখানে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে এসে রিকশা থেকে তিন নেতাকে নামিয়ে নিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।
একই তথ্য জানালেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালের উল্টো দিকে খাবারের দোকানের কর্মচারী মো. সালাউদ্দিন বলেন, মোটরসাইকেল ও গাড়ি থেকে নেমে সাত-আটজন ওই রিকশার সামনে দাঁড়ায়। তারা তিনজনকে রিকশা থেকে নামাতে গেলে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। পরে তিনজনের প্রত্যেককে দুপাশ থেকে দুজন করে ধরে গাড়িতে তুলে নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলন শেষে দুপুর ১২টার দিকে রাশেদ খান জানান, তারা শাহবাগ থানায় যাবেন। তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন।
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্যে যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক নূর বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিত্তিহীনভাবে যে অজ্ঞাতনামা মামলা দিয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা এখনো প্রত্যাহার করেনি। আগামী দুদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে মামলা দিয়েছে, তা প্রত্যাহার না করলে ছাত্রসমাজ আবার আন্দোলনে নামবে।’
এর পরই পরিষদের নেতারা ঢামেক হাসপাতালে যান আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে হামলায় অসুস্থ নেতাকর্মীদের দেখতে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পথেই তিন নেতাকে তুলে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
Discussion about this post