নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার মধ্যে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ পেতে ১৩ হাজার পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা আদৌ হবে কিনা সে বিষয়ে আগামীকাল রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন কথা বলেন।
করোনাকালে ভিড়ের মধ্যে পরীক্ষার অংশগ্রহণ নিয়ে উদ্বিগ্ন সারাদেশের ১৩ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও তাদের পরিবার। তাই আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরীক্ষার বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি এখনও কথা (বার কাউন্সিলের সঙ্গে) বলিনি। কাল (রবিবার) বার কাউন্সিল খুলুক। তখন আমি তাদের (এনরোলমেন্ট কমিটি)র সঙ্গে কথা বলবো।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী আমার কাছে তাদের দাবির কথা বলেছে। তাদের নাকি বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, আমি বললে নাকি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। কিন্তু আমি তো তাদের এনরোলমেন্ট কমিটিতে নেই। তবে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ করবো।’
প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতির মাধ্যমে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা নিতে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের মধ্যে পরীক্ষা না নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বার কাউন্সিলের পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগের বিরুদ্ধে সংসদ অধিবেশনে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
গত ৭ সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশনে তিনি বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে বার কাউন্সিল আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নিয়মিত পরীক্ষার ব্যত্যয় ঘটিয়ে আসছে। তবে ৬৫দিন ধরে প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে করোনার মধ্যে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের আন্দোলন দমাতে বার এমন সিদ্ধান্ত কীভাবে নিয়েছে? তাই করোনা মহামারির অবস্থা বিবেচনায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীকে একত্রিত করে আবার যেন সংক্রমণ বৃদ্ধি না করে!
আগে শুধু মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) মাধ্যমে আইনজীবীদের সনদ দেওয়া হতো। তবে দিন দিন শিক্ষার্থীদের চাপ বাড়তে থাকায় আইনজীবী হতে বর্তমানে নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার ওই তিন ধাপের যে কোনও একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একবার উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তারা দ্বিতীয় ও শেষবারের মত অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
তবে দ্বিতীয়বারেও অনুত্তীর্ণ হলে তাদের পুনরায় শুরু থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। সে অনুসারে ২০১৭ সালের ৩৪ হাজার শিক্ষর্থীর মধ্যে থেকে লিখিত পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো বাদ পড়া তিন হাজার ৫৯০ শিক্ষার্থী এবং ২০২০ সালে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মধ্যে এমসিকিউ উত্তীর্ণ আট হাজার ৭৬৪ শিক্ষার্থী সহ সর্বমোট ১২ হাজার ৮৫৮ জন সনদ প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
প্রসঙ্গত, আপিল বিভাগের রায় প্রতিপালন না করে অনিয়মিত পরীক্ষা গ্রহণ ও খাতা রিভিউ সুবিধা না দেওয়াসহ বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। আন্দোলনের মুখে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় বার কাউন্সিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হওয়ায় এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা না দিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরীক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।
Discussion about this post