আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালদ্বীপের বৈধ সরকারকে ক্ষমতায় শপথ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। দুই বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, এ জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত আছেন তারা।
আজ রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরে রাজধানী মালেতে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আহমেদ শিয়াম সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের শপথ পড়িয়েছেন। সেনা ও পুলিশের কর্মকর্তাদের এ শপথ অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া এক আদেশের জেরে গভীর রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে। রবিবার সকালের দিকে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করতে সুপ্রিম কোর্টে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ আনার পর এ সঙ্কট আরো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এর পরই দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাজধানী মালেতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবন সিলগালা করার পর দখলে নিয়েছে।
৮৫ আসনবিশিষ্ট মালদ্বীপের পার্লামেন্টে বিরোধীদলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। গত বছর দেশটির ক্ষমতাসীন দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পার্লামেন্টের ১২ সদস্যের পদ বাতিল করা হয়। পরে পুনরায় তাদের স্বপদে বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট।
মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি আব্দুল্লা সাইদ ও বিচারপতি আল হামিদ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ঘুষের তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানানোর পর তিনি টেলিভিশনে ভাষণ দেন। দেশটির চিফ জুডিশিয়াল প্রশাসককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে, স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল ও প্রধান প্রসিকিউটরের ওপর আস্থা নেই বলে তাদের পদত্যাগের দাবিতে সংসদ সচিবালয়ে পিটিশন দিয়েছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। দেশটির বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লা শহীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিদেশ থেকে মালদ্বীপে ফেরার পরপরই রাজধানী মালের বিমানবন্দরে গ্রেফতার হয়েছেন আব্দুল্লা সিনান ও ইহাম আহমেদ নামের দুই সংসদ সদস্য। পুলিশ বলছে, ফারিশ মামুন ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতের নির্দেশেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে কারাবন্দি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতাকে মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আদেশ সরকার বাস্তবায়ন না করায় মালদ্বীপে এ রাজনৈতিক সঙ্কটের সূত্রপাত হয়।
সূত্র: আলজাজিরা।
Discussion about this post