কেউ একজন আপনার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকিং করে নেয়ার চেষ্টা করেছেবা আপনার একাউন্ট হ্যাক করে কেউ আপনার সব টাকা নিয়ে নিয়েছে। এই ধরনের হ্যাকিং সংক্রান্ত অভিযোগ আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। তথ্যপ্রযুক্তির যত উন্নতি হচ্ছে হ্যাক বা হ্যাকিং সংক্রান্ত বিষয়গুলো
আমাদের কাছে আরো বেশি স্পষ্ট হয়ে ধরা দিতে শুরু করেছে।
হ্যাকিং কি?
হ্যাকিং হচ্ছে এমন এক ধরনের বেআইনী প্রচেষ্টা যার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তির অ্যাকাউন্টে বা নেটওয়ার্কে বা কম্পিউটারে প্রবেশ করে তার গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় তথ্যকে তার অনিচ্ছা এবং অজ্ঞতাসারে গ্রহণ
করা, মুছে ফেলা বা এমন কোনভাবে পরিবর্তন করা যা ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকারক হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী,
“হ্যাকিং” অর্থ
ক) কম্পিউটার তথ্য ভান্ডারের থেকে তথ্য বিনাশ,বাতিল, পরিবর্তনবা উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ বা অন্য কোনভাবে
ক্ষতিসাধন; বা
খ) নিজ মালিকানা বা দখলবিহীন কোন কম্পিউটার, সার্ভার,কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক
সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে উহার ক্ষতিসাধন।
আপনি হয়ত ভাবছেন বিষয়টা কতটা মজার হতে পারে! যদি আপনি হ্যাকিংজানতেন, তবে হয়ত আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে অনেক মজা করতে পারতেন। আপনার হয়ত ধারণাই নেই যে এই বিষয়টা কতটা ভয়ানক হতে
পারে। হ্যাকিং ব্যক্তি,সমাজ,দেশ,ও জাতির জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারণ হতে পারে
হ্যাকিং এর মাধ্যমে অনলাইন জগতে প্রায় সবকিছুই করা সম্ভব। যেমন:অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করা, কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, ভাইরাস বা কোন ক্ষতিকর প্রোগ্রামের মাধ্যমে আক্রমণ এই সবকিছুই হ্যাকিং এর মাধ্যমে করা সম্ভব।এছাড়া মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও ডিজিটাল যন্ত্র সবকিছুকেই
হ্যাকিং এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
হ্যাকার কে?
হ্যাকার হল এমন ব্যক্তি যে অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য কম্পিউটার সিস্টেম অথবা নেটওয়ার্কগুলির দুর্বলতা খুঁজে পায় এবং তাদের কাজে লাগায়। হ্যাকাররা সাধারণত কম্পিউটার সুরক্ষার জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষকম্পিউটার প্রোগ্রামার। হ্যাকাররা বিভিন্ন নেটওয়ার্ক, ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের ত্রুটি বের করে সেই ত্রুটির ওপর ভিত্তি করেইহ্যাক করে।সুতরাং যেই ব্যাক্তি হ্যাকিং করা বা হ্যাকিং এর সাথে জড়িত তাকেই হ্যাকার বলে।
হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী,
১) যদি কোন ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহলে এটি হবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১৪ বছর কারাদন্ডে, বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
২) যদি কোন ব্যক্তি একই অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটনকরেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা অনধিক ৫ কোটি টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
বিশ্বায়নের এই যুগে হ্যাকার আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের সকলতথ্য, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য , ব্যাংক একাউন্ট তথ্য, কোন অন্তরঙ্গ ছবি বা আরো অনেক কিছু যা হয়ত আপনি অন্য যে কাউকে দেখাতে বা জানাতে ভয় পান তা নিয়ে যেতে পারে আপনি হয়ত জানতেও পারবেন না। তাই আসুন সকলে তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন হই,অন্যের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকি এবং আইন মেনে চলি।
Discussion about this post