নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনসহ ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে এই দুর্যোগকালীন সময়ে অক্সিজেনসহ ওষুধের সরবরাহ বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী নিজে।
আজ বুধবার (১০ জুন) দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সংযুক্ত করে জনস্বার্থে সকালে ই-মেইলে সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন।
স্বাস্থ্য সচিব ছাড়া নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) মহাপরিচালককে (ডিজি)।
নোটিশে বলা হয়, আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে মেডিকেল অক্সিজেনসহ ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে এবং এর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আইনজীবী জানান, দেশে করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে এবং দিনে দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রোগীদের বিভিন্নভাবে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার সার্বিক প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে অধিক জনসংখ্যার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল। তার ওপর করোনা দুর্যোগে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ নতুনভাবে সংক্রমিত হচ্ছে তাদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, এর মধ্যে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিবেদনের মাধ্যমে ইদানিং লক্ষ্য করছি করোনা চিকিৎসার জন্য বহুল ব্যবহৃত মেডিকেল অক্সিজেন এবং এই সংক্রান্ত ওষুধের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। এই ওষুধগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রকৃত দামের থেকে অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যা করোনায় বিপর্যস্ত মানুষকে আরও বেশি দুর্বিষহ করে তুলেছে এবং তাদের জীবনহানির আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় এবং করোনা মহামারি রোধে সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও এক শ্রেণীর মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এই দুর্যোগকালীন সময়ে ওষুধের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। তাদের ওষুধের দাম বৃদ্ধি করার কারণে এই করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় পড়েছে। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
আইনজীবী আরও জানান, আমরা লক্ষ্য করছি শুধু সিন্ডিকেট করে ওষুধের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিই নয় অনেক ক্ষেত্রে মানহীন এই মেডিকেল আক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বাজারে সরবরাহ করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী দুর্যোগের মধ্যে তাদের মুনাফা এবং ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যে বিষয়টি এই মুহূর্তে বন্ধ করা খুবই জরুরি।
তাই বৃহত্তর জনস্বার্থে মেডিকেল অক্সিজেনসহ ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতি এই নোটিশ পাঠিয়েছি। পাঁচ দিনের মধ্যে মেডিকেল অক্সিজেনসহ ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে এবং এর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Discussion about this post