নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানো তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়েছিল।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আইসিইউর চিকিৎসক রাজীবকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. রেজার বরাত দিয়ে রাজীবের চাচা আলামিন জানান, আইসিইউর চিকিৎসকরা রাতে তাদের জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে লাইফ সাপোর্টে থাকা রাজীবের অবস্থা অবনতি হয়। বহু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারলেন না তারা। রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজীবকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া রাজীবের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।
মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব গত ৩ এপ্রিল দুপুরে বাসে করে কলেজে যাওয়ার সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী বেলা দেড়টার দিকে বাংলামোটরের দিক থেকে একটি দোতলা বিআরটিসি বাস ফার্মগেটের দিকে আসছিল। সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে এসে দোতলা বাসের পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় দুই বাসের মাঝে পড়ে রাজীবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ওই ঘটনার পর পথচারীরা রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার পরপরই স্বজন পরিবহনের চালক বাস রেখে পালিয়ে যায়। দোতালা বাসের চালক ওয়াহিদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তিতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের তিনি সবার বড়। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন বলে রাজীবের মামা জাহিদুল জানিয়েছিলেন।
রাজীব হোসেনের চিকিৎসা ব্যয় বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে বহন করতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
Discussion about this post