আইনের শাসন বজায় রাখার স্বার্থে আইনজীবী সমিতি (বার) ও বেঞ্চের মধ্যে যেন কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়- এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
দুই আইনজীবীকে জরিমানা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
আইনজীবী সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। আইনজীবী ও বিচারকের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ থাকলেই শুধু আদালত সুষ্ঠুভাবে তার মহান দায়িত্ব পালন করতে পারেন। দেশের আইনজীবীরা আইন ও আদালতের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের আইনপেশায় নিয়োজিত করেছেন। এই অন্যান্য ভূমিকার জন্য আইনজীবীদের আদালতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলা হয়ে থাকে। আদালত সহনশীলতার সাথে তার ওপর অর্পিত মহান দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অথচ ইদানীং দুই-একটি আদালতে মামলার শুনানি চলাকালে আইনজীবীদের বিভিন্নভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহারের জন্য যুগযুগ ধরে গড়ে তোলা বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্কের অবনতি হচ্ছে বলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মনে করে।’
প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৮ নভেম্বর রিট পিটিশন নম্বর ১৩১৪২/২০১৯ এর শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুইজন সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে ১০০ টাকা করে জরিমানা এবং আদালত অবমাননার রুল ইস্যু করা হয়েছে। শুনানিতে আইনজীবীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। যা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মামলা দায়ের কিংবা পরিচালনার কারণে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্য কিংবা আদালত অবমাননার রুল ইস্যুর ক্ষেত্রে আদালতের কাছে সমিতি আরও সহনশীলতা প্রত্যাশা করে।’
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি তারিক-উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
গত ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বারবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।
Discussion about this post