নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ সম্পাদক ও লেখক আনিসুল হকসহ পাঁচ জনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের সম্পত্তি ক্রোক সংক্রান্ত আদেশটি প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আসামিরা আইনজীবীদের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের এ আদেশ দেন।
জামিনপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল ও শাহ পরান তুষার।
আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিনের এ আদেশ দেন আদালত। তিনি আরও জানান, জামিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি।
এর আগে গতকাল (০২ সেপ্টেম্বর) আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে নাইমুল আবরার নিহত হওয়ায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামি জামিন নেন।
মামলার আসামিরা হলেন−মতিউর রহমান, আনিসুল হক, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহ পরান তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।
গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে দৈনিক প্রথম আলো’র সাময়িকী কিশোর আলোর অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চের পেছনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় ওই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার। পরে ৬ নভেম্বর নাঈমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে ঢাকার এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
মামলায় মজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, অনুষ্ঠানস্থলে বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রের বিষয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আয়োজকদের গাফিলতি ছিল, যার ফলে তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল অনুষ্ঠানস্থলের কাছাকাছি থাকলেও আবরারকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিশোর আলো এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে আবরারের মৃত্যুর তথ্য গোপন করা এবং মর্মান্তিক ঘটনার পরেও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন তিনি।
Discussion about this post