বিডি ল নিউজঃ তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তার আইনজীবী। তবে ঠিক কি কারণে আবেদন প্রত্যাহার করেছেন তা জানা যায়নি। আজ রোববার (১০ জুন) জামিন আবেদনের পর তা আবার প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবী নুসরাত জাহান। তিনি বলেন, আমরা আজ (রোববার) জামিন শুনানি করব না। আগামীকাল (সোমবার) করব। এর আগে আজ (রোববার) সকালে আসিফের জামিন চেয়ে আদালতে একটি আবেদন করা হয়। জামিন আবেদনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন তেজগাঁও থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক তাহেরা বেগম। ঢাকা মহানগর হাকিম আমিরুল হায়দার চৌধুরীর আদালতে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই জামিনের আবেদন শুনানির জন্য উঠলে আইনজীবী নুশরাত জাহান আবেদনটির শুনানি না করে তা প্রত্যাহার (নট-প্রেস) করে নেন। এ সম্পর্কে মামলার অপর আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, আজ আমরা আবেদনটি প্রত্যাহার করেছি। আগামীকাল (সোমবার) পুনরায় জামিনের আবেদন দিতে পারি। এর আগে গত ৬ জুন আসিফের ৫ দিনের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক শফিক তুহিনের মামলায় কারাগারে পাঠান আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক প্রলয় রায় এ রিমান্ড আবেদন করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক শফিক তুহিনের করা তেজগাঁও থানার মামলায় গত ৫ জুন রাতে গ্রেপ্তার হন আসিফ আকবর। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল আসিফকে মগবাজারে তার অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে। মামলায় আসিফ ছাড়া আরো চার-পাঁচজন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ১ জুন রাত ৯টার দিকে চ্যানেল ২৪ এর সার্চ লাইট নামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে শফিক তুহিন জানতে পারেন, আসিফ আকবর তার অনুমতি ছাড়া তার সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানা যায়, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রাইভেট লিমিটেড কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লিমিটেড গাক মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেড ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাদুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, পরে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গত ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির ওই ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। তার ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেন। পরের দিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইক সমৃদ্ধ ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন।
মোট ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তার (শফিক তুহিন) বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন। ভিডিওতে আসিফ আকবর তাকে (শফিক তুহিন) শায়েস্তা করবেন এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাকে যেখানেই পাবেন সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে হত্যার হুমকে দেয়। আসিফ আকবরের এই বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।
এজাহারে শফিক তুহিন আরও উল্লেখ করেন, বিষয়টি সংগীতাঙ্গনের সুপরিচিত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার প্রীতম আহমেদসহ অনেকেই জানেন।
Discussion about this post