নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বুধবারের মতো তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেছে। আজ রাতে আলোচনায় বসবে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করা সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন বলে জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক নূর।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক এ কথা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ অনেকে।
বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করেন। কোটার বিষয়ে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় তিনি বলেন, ছাত্ররা যেহেতু আর কোটাব্যবস্থা চায় না সেহেতু এখন থেকে বাংলাদেশে আর কোটা ব্যবস্থা থাকবে না। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হবে।
তবে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে বিশেষ বিবেচনায় চাকরি দেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাসভবনে যারা হামলা করেছে তাদের খুঁজে বের করে বিচার করা হবে।
তিনি বলেন, যারা ভাঙচুর লুটপাটে জড়িত, তাদের বিচার হতে হবে। লুটের মাল কোথায় আছে, তা ছাত্রদেরই বের করে দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ রোদের মধ্যে ছাত্ররা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছে, এটা ঠিক হচ্ছে না। তারা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এমনিতেই ঢাকায় যানজট লেগে থাকে সব সময়। রাস্তাঘাট বন্ধ করে ছাত্ররা আন্দোলন করছে। এতে মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ হচ্ছে। যেহেতু এত কিছু হচ্ছে, তাই আর কোনো কোটাই থাকবে না। বাতিল করে দিলাম।
এ সময় কোটা পদ্ধতি বাতিল করার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরাসরি ঘোষণা দেয়ার আহবান জানান আন্দোলনকারীরা। তা না হলে তারা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি বন্ধ করবে না বলে হুশিয়ারি দেন।
দুপুরে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মো. রাশেদ খান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কোনো মন্ত্রী বা অন্য কোনো পর্যায়ের নেতার মুখের কথা শুনে আমরা আমাদের আন্দোলন বন্ধ করব না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই এ কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা শুনতে চাই।
এছাড়া দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন আন্দোলনকারীদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে মানববন্ধন করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। পরে আবার ২৫ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা। ৩ মার্চের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান দাবি করেন। সমাধান না হওয়ায় আবার আন্দোলনে নামেন।
Discussion about this post