মিহির মিশকাতঃ অবশেষে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি শিথিল করল সরকার। এখন থেকে কোটার কারণে কোনো পদ শূন্য থাকবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকার ওপরের দিকে থাকা প্রার্থীদের ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
গতকাল বুধবার এসংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোটা পদ্ধতি শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোটার কারণে অনেক পদ শূন্য থেকে যায়। এ কারণে কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে পূরণ করা হবে।’ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং চাকরিপ্রার্থীরা অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করছে। তাদের এ আন্দোলনের মধ্যেই সরকারের এ আদেশ এলো।
সরকারি চাকরিতে বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ। তবে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেসব পদ খালি রাখার নির্দেশনা দিয়ে ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি একটি অফিস আদেশ জারি করেছিল।
ওই আদেশের পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর এমনকি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি কর্মকমিশনও (পিএসসি) বিপাকে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার কারণে ২৮তম থেকে ৩৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে এক হাজার ৭৫৪ জনকে নিয়োগ দিতে পারেনি পিএসসি। ক্যাডার পদও খালি থেকে যায়। একইভাবে আনসার ও ভিডিপির সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট/উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই সমস্যার সৃষ্টি হয়। সাড়ে ৯ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই সমস্যায় পড়ে পিএসসি। এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করেছে আরো বেশ কিছু দপ্তর ও সংস্থা। বিশেষ করে কারিগরি ক্যাডারের পদগুলো বেশির ভাগই অপূরণকৃত থেকে যায়। এই অবস্থায় পিএসসির আবেদনে সাড়া দিয়ে ৩৫তম ও ৩৬তম বিসিএসে কোটা পদ্ধতি শিথিল করে সরকার। পরে প্রায় ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা শিথিল করা হয়।
Discussion about this post