নিজস্ব প্রতিবেদক: চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর কোটা নিয়ে আন্দোলন করা সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন বলে জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কমিটির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান গণমাধ্যমকেকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এ প্রসঙ্গে সংগঠনের আহবায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমদের কোটা সংস্কার চেয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি এবং তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির সবাই রাতে বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখব বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি করার পর যদি বুঝি আমাদের ন্যায্য দাবি প্রত্যাশা অনুযায়ী পূরণ হয়নি, তখন আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’ তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে একটি চিঠি দেবো। যারা কোটার প্রাপ্য দাবিদার, তারা কোটা পাক, এটা আমরাও চাই। যেমন মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং প্রতিবন্ধী কোটার দাবিদারদের কোটা দিতে ওই চিঠিতে আহ্বান জানাব। তবে সেটা যেন প্রাপ্য পরিমাণযোগ্য হয়।’
সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা বলেন, ‘আমরা আজ বেলা ১১টার সময় ক্যাম্পাসে একটি আনন্দ মিছিল বের করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, কোটা বাতিলের দাবিতে গত রবিবার থেকে বড় আকারে আন্দোলন শুরু হয়। গতকাল বুধবার শাহবাগ এবং ঢাকার অন্যত্র সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে সরব হয়। দেশের নানা জায়গায় সড়ক অবরোধ হয় এ দাবিতে। ঢাকায় আন্দোলনকারীরা কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দাবি করেন। দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের কোটা বাতিলের কথা বলেছেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্লাস বন্ধ। পড়াশোনা বন্ধ। এরপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য, আর বারবার এই আন্দোলনের ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলো বাতিল।’
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটাপদ্ধতিরই দরকার নেই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তাদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এই আন্দোলন যারা করেছে, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তারা ক্লাসে ফিরে যাক।’
Discussion about this post