ফয়সাল সিদ্দিকী:
ফেসবুকে দেখি সবাই মনিরামপুর এর এ.সি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসান কে নিয়ে লিখেছে কিন্তু আমার অনেক কাজ থাকায় এ বিষয়ে লিখিনি। এখন সবচেয়ে আলোচিত শব্দ হলো লকডাউন, কোয়ারান্টাইন, আইসোলেশন, করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির দাফন, রাস্তায় পেলেই মার, করা ধরে ওঠবস করানো ইত্যাদি। বড় করে লিখলে কেউ পড়েনা তাই সংক্ষেপে শুধুমাত্র আইনজীবী নয় এমন বন্ধুদের জন্য লিখছি৷
#Lockdown means a situation in which people are not allowed to enter or leave any building or area due to emergency. এবং সংক্রামণ রোগ (প্রতিরোধ, নিরোধ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ১১ ধারা অনুযায়ী লকডাউন ঘোষণা করা হয় কিন্তু বাংলাদেশে গুটিকয়েক জায়গা ব্যাতীত কোথাও লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি।
#কোয়ারান্টাইন অর্থাৎ সঙ্গরোধ এর বিষয়ে আলাদা কোনো ধারা উক্ত আইনে না থাকলেও যদি কেউ নির্দেশ(অর্থাৎ নির্দেশ বলতে এই ধরনের রোগ প্রতিরোধের জন্য যেকোনো নির্দেশ) অমান্য করে তাহলে তিনি উক্ত আইনের ২৫(১)(খ) ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন এবং তিনি ২৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তি পাবেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- আপনাকে বাধ্যতামুলক কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হলো কিন্তু আপনি শ্বশুরবাড়ি পালালেন সো তখন আপনাকে উপরোক্ত ধারায় শাস্তি দেয়া হবে।
#Isolation অর্থাৎ ইতিমধ্যেই আক্রান্ত কোনো ব্যাক্তিকে অন্য সুস্থ কোনো ব্যাক্তির সংস্পর্শ থেকে দুরে রাখার জন্য উক্ত আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী আইসোলেশনে রাখা হয়।
#মৃত যদি কোনো সংক্রমিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন তাহলে তাকে উক্ত আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী দাফন করা হবে।
#দন্ড সংক্রামিত রোগের সময় কেউ যদি উপরোক্ত আইন বা নির্দেশ অমান্য করে তাহলে তাকে এই আইনের ২৪, ২৫ ও ২৬ ধারায় দন্ড ও জরিমানার কথা বলা আছে।
#রাস্তায়_পেলে_মাইর রাস্তায় কেউ বের হলেই তাকে মারা যাবেনা। কারণ সরকার ঔষধ, কাঁচাবাজার ও সুপার শপগুলো খোলা রাখার জন্য বলেছে। তো এগুলো চালায় কিছু মানুষ যারা বাইরে বের হবে আর এগুলোতে প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও করতে যায় কিছু মানুষ সো আপনারা মারছেন কেনো? হাসপাতালগুলোতে যেসব ডাক্তার কাজ করে তাদেরকেও বের হতে হয় আর যারা রোগী হিসেবে যাচ্ছে তাদেরকেও বের হতে হচ্ছে সো মারছেন কেনো? কোন্ আইনে? কাউকে আড্ডায় দেখলে মারুন কিন্তু চলন্ত পথিককে কিছু জিজ্ঞেস না করেই কেনো গরুর মতো পিটাচ্ছেন? উপরোক্ত পুরো আইনটাতে কোনো মাইরের কথা নাই তো।
#কানধরে_ওঠবস এটা একটা জঘন্য অপরাধ। আর একজন এসিল্যান্ড যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সময়ে এমন তিনজন বৃদ্ধ মানুষকে এই জঘন্য নির্যাতনটা করেছেন যাদের কোনো অপরাধ নেই কারণ তাদের একজন ভ্যান নিয়ে জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নেমেছিলেন, আরেকজন কাঁচামাল বিক্রি করছিলেন এবং এদের মুখে মাস্ক ছিলোনা! খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই রাস্তায় কাঁচামাল বিক্রি বা ভ্যান চালানোর বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই। সরকার শুধু নাগরিকদের ঘরে থাকতে উৎসাহ দিয়েছেন আর ঘরে থাকার সুবিধার্থে ছুটি দিয়েছেন। তাই এসব বৃদ্ধ মানুষকে উপরোক্ত আইনের ২৫(১)(খ) ধারায় শাস্তি দিতে গেলে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করেছে দেখানো লাগবে যা এখানে ছিলোনা। আর মাস্ক! সংক্ষেপে বল্লাম এটা পরার কোনো দরকার নেই। যদি কারো এ বিষয়ে জানতে ইচ্ছে করে তাহলে ইউনিসেফ এর সহ বহুত ডাক্তারের আর্টিকেল আছে পড়ে নেবেন। নাহলে পরিচিত ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করবেন। ওই ভদ্রমহিলা ফৌজদারী অপরাধ করেছেন। বিচার হওয়া উচিৎ।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
Discussion about this post