ডেস্ক রিপোর্ট: পৃথক দুটি হত্যা মামলায় কুষ্টিয়ায় ৫ আসামীর ফাঁসি ও অপর ৬ জনকে যাবজ্জীবন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনমজুর রাকিব ওরফে বাবু হত্যা মামলায় তিনজনকে ফাঁসি ও নিহতের স্ত্রীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ কর্মী নূরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৫ আসামীর ফাঁসি এবং অপর ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি মশিয়ার রহমান এ রায় দেন।
ফাঁসিরদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার মতিয়ার রহমান, মো. মাসুদ, পারভেজ, হাবিবুর রহমান হবি, সরোয়ার হোসেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামীরা হলেন, একই এলাকার কবির হোসেন, ফজলুর রহমান, খালেকুজ্জামান ভুট্টো, মিজানুর রহমান রকি, আবদুস সালাম ও এনায়েত রহমান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯শে ডিসেম্বর বিকেলে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী নূরুল ইসলাম কামারডাঙ্গা থেকে বিকেলে পোড়াদহ বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পোড়াদহ স্কুলের সামনে আসামীরা ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নূরুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে তিনি মারা যান। পরদিন নিহত নুরুল ইসলামের ছেলে শাহিনুর রহমান সজিব বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামী করে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯ জন আসামীর মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০শে এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দিনমজুর রাকিব ওরফে বাবু হত্যা মামলায় তিনজনকে ফাঁসি ও নিহতের স্ত্রীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসমিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আজ বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শওকত আলী এ আদেশ দেন।
ফাঁসিরদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পরানপুর-বলিহারপুর গ্রামের মেনশাদ মন্ডলের ছেলে মেহরাব হোসেন ওরফে বাচ্চু, মহেশপুরের বাহার আলীর ছেলে জামাল উদ্দীন ও ছোট মহেশপুরের আব্দুস সাত্তারের ছেলে হযরত আলী। এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন, পরানপুর বলিহারপুর গ্রামের নিহত রাকিব ওরফে বাবুর স্ত্রী সাহেরা খাতুন, আলাউদ্দীনের ছেলে মো. মোহবুল, মো. মঙ্গলুর ছেলে মো. মিটুল ও ছোট মহেশপুর গ্রামের রবুর ছেলে আসলাম। এছাড়া এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত আটজনকে বেকসুর খালাস দেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আঞ্জুমান আরা জানান, জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পরানপুর বলিহারপুর গ্রামের নাইমুল ইসলামের ছেলে রাকিব ওরফে বাবু ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি। পরদিন সকাল ৭টায় মহেশপুরের মহানন্দা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের বাবা নাইমুল ইসলাম বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি তদন্ত করে শিবগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল করিম ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় প্রদান করেন। মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয় সাজাপ্রাপ্তরা দিনমজুর রাকিব ওরফে বাবুকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।




Discussion about this post