নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: জাল জন্মসনদ তৈরির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব।) আটককৃতরা হলো- সিদ্ধিরগঞ্জের সাইফুল ইসলাম (২৪), আজিম হোসেন (২৬), ফজলুল করিম (৩৩), ঢাকা মহানগরীর মাঈন উদ্দিন (৩৮), জাহাঙ্গীর (৩৬) এবং নেত্রকোনার মামুন মিয়া (৩৫)।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাশে তিনটি দোকানে এই অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসময় তিনটি দোকান থেকে বিপুল পরিমাণ সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদের জন্মসনদ, জন্ম নিবন্ধন তৈরির সিল, সনদের হার্ড কপি এবং সনদের সফট কপির হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-২-এর পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী।
র্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, এরা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ন্যাশনাল সার্ভার হতে তৈরি করে সরবরাহ করত। এদের হার্ডডিস্ক চেক করে আমরা প্রচুর জন্মসনদ পেয়েছি। অনেক হার্ড কপিও পেয়েছি। এরা আবার রোহিঙ্গাদেরও এসব জন্মসনদ তৈরি করে দিয়ে পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করত।
তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে তারা ১৩/১৪ জন রোহিঙ্গাকে জন্মসনদ তৈরি করে পাসপোর্ট করে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করার পর সে রকম তথ্য প্রমাণ জব্দ করেছি আমরা। এগুলো সব আসল জন্মসনদ। কিন্তু যাদের নামে জন্মসনদগুলো তৈরি করা হয়েছে সেই লোকগুলো সনদ গ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের নয়।
তিনি আরও বলেন, ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা বিনিময়ে সিটি করপোরেশন ও দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা ও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের নামে জন্মসনদ তৈরি করে দেওয়া হতো।
পরবর্তীতে তারা সেই জন্ম নিববন্ধন দিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করত। কারণ, পাসপোর্টের আবেদনে দেয়া তথ্য তাদের জন্মসনদের সার্ভারের তথ্যের সাথে মিলে গেলে সহজেই পাসপোর্ট পেতে তাদের আর বাধা থাকতো না। এক্ষেত্রে কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামিও যদি তার নাম ও বাবার নাম পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করে তাদেরকে বিমান বন্দরে আটকানোর কোনো সুযোগ থাকে না।




Discussion about this post