অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর বাড্ডার একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে জুরি বোর্ড বসিয়ে নারী বাছাই করে দুবাইয়ে পাচার করতেন আজম খান। ওই রেস্টুরেন্টের নাম জিনজিয়ান। গত বছর জুলাইয়ে সহস্রাধিক নারীকে কাজ দেওয়ার নামে যৌনকর্মে বাধ্য করায় আজম খানকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
দুবাইয়ে চার তারকাযুক্ত তিনটি ও তিন তারকাবিশিষ্ট একটি হোটেলের মালিক তিনি। হোটেলগুলো হলো- ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স ক্লাব, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্র্যান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ার।
এসব হোটেলে আজমের ব্যবসায়িক নানা বিষয়ে বৈঠক ও পার্টির আয়োজন করা হতো। পার্টির আয়োজনের দায়িত্বে থাকতেন আলমগীর, নাজিম, এরশাদ, সজীব, অপূর্ব ও মহিউদ্দিন।
সিআইডি সূত্র জানায়, দুবাই বিমানবন্দরে নামার পরই আজম খান তার পরিচালনাধীন হোটেলগুলোতে বিভিন্ন মডেল ও বাংলাদেশ থেকে নেওয়া নারীদের নিয়ে রাখতেন। আজমের সঙ্গে তার দুই ভাই নাজিম ও এরশাদও এসব ব্যবসা পরিচালনা করেন।
গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ড্যান্সবারের আড়ালে নারী পাচারের অভিযোগে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তার বিরুদ্ধে লালবাগ থানার মামলায় অপর আসামি হৃদয় আহমেদ ওরফে কুদ্দুসকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় দুবাইয়ে মানব পাচারে জড়িত মডেল ও নৃত্যশিল্পীসহ বেশ কিছু নামসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি ৬ আগস্ট গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই জবানবন্দিতেই বাড্ডার জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টে জুরি বোর্ড বসানোর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে স্বাধীন কালচারাল একাডেমি নামে একটি ড্যান্স ক্লাব পরিচালনা করতেন হৃদয়। এখানে নাচ শেখা কয়েকজন তরুণীকে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ৫ আগস্ট অন্তত ১৫ জন মডেল ও নৃত্যশিল্পীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, ইভান শাহরিয়ারের মোবাইলফোনে বেশ কিছু পাসপোর্টের ছবি পাওয়া যায়। ওই সব পাসপোর্টের তথ্য থেকে মডেল ও নৃত্যশিল্পীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার কাছ থেকে পাচারকারী সিন্ডিকেটে মিজানুর রহমান রনির নামও পেয়েছেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা।
রনি হলেন বাবা-মা হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশীর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দুই বছরের সাজাভোগের পর তিনি কোথায় আছেন তার সম্পর্কে কেউই কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে বাংলাদেশে থাকা আজম সিন্ডিকেটের মধ্যে ইয়াছিন, ডায়মন্ড, ময়না, স্বপন ও নির্মল গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
Discussion about this post