সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার হোমিও ডাক্তার মোখলেসুর রহমান জনিকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগ এনে সাতক্ষীরা সদর থানার দুই সাবেক ওসি ও এক এসআইয়ের বিচার দাবি করে মামলা করেছেন তার বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক হুমায়ূন কবিরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিখোঁজ জনির বাবা শেখ আবদুর রাশেদ।
সাতক্ষীরা সদর থানার সাবেক দুই ওসি এমদাদ শেখ ও ফিরোজ মোল্লা এবং এসআই হিমেলকে আসামি করে এ মামলা করেন তিনি।
মামলায় জনির বাবা শেখ আবদুর রাশেদ উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট তার ছেলে ডা. মোখলেসুর রহমান রাত ৯টায় শহরের লাবনী মোড়ে ওষুধ কিনতে আসে। এ সময় সাতক্ষীরা থানার এসআই হিমেল তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লকআপের মধ্যে থাকা জনির সঙ্গে কথা বলেন তিনি ও তার পুত্রবধূ জেসমিন নাহার রেশমা। পরপর দুই দিন সাক্ষাৎ এবং তাকে খাবারও দেন তারা।
তিনি জানান, তার ছেলের মুক্তি প্রসঙ্গে জানতে গেলে ওসি এমদাদ ও এসআই হিমেল রাশেদের কাছে মোটা অংকের ঘুস দাবি করেন এবং বলেন- জনি আল্লাহর দলের সদস্য ও জঙ্গি। পুলিশ তাদের কাছে আইডি কার্ডও চায়।
শেখ আবদুর রাশেদ মামলায় উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ফের জনির সঙ্গে দেখা করতে থানায় গেলে পুলিশ জানায় সে কোথায় তা আমাদের জানা নেই। বলা হয় আমরা জনিকে গ্রেফতার করিনি।
আবদুর রাশেদ জানান, বিষয়টি তিনি তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনকে জানান। পরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেসমিন নাহার স্বামীর খোঁজ দাবি করেন।
এ ঘটনার পর উচ্চ আদালতে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি রিট পিটিশন করা হয়। এরই মধ্যে সাতক্ষীরা সদর থানায় জিডি করতে গেলে ওসি ফিরোজ মোল্লা তা গ্রহণ করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে হাইকোর্ট সাতক্ষীরা থানার সাবেক দুই ওসি এমদাদ শেখ ও ফিরোজ মোল্লা এবং এসআই হিমেলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার বাদীপক্ষকে ফৌজদারি মামলা করার আদেশ দেন।
শেখ আব্দুর রাশেদ এ মামলায় উল্লেখ করেন, তার ছেলে ডা. মোখলেসুর রহমান জনিকে পুলিশ অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করেছে। তিনি এর সঙ্গে জড়িত সাবেক ওসি এমদাদ শেখ, সাবেক ওসি ফিরোজ মোল্লা এবং সাবেক এসআই হিমেলের বিচার দাবি করেন।
মামলাটি পরিচালনা করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষে অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন। তারা জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত।
Discussion about this post