আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভলপমেন্ট রেবহাদের (১এমডিবি) আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সাতটি মামলায়ই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধরপাকড়ে দেশটির চেষ্টার প্রথম পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে এই মামলাকে। যেখানে ব্যাপক রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) কুয়ালালামপুর হাইকোর্টের বিচারক মোহাম্মদ নাজিম মোহাম্মদ গাজ্জালি এ সংক্রান্ত প্রথম মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, এ মামলার সমস্ত তথ্যপ্রমাণ বিচার করে দেখা গেছে, প্রসিকিউশন তাদের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আস্থা লঙ্ঘন, অর্থ পাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সাতটি মামলার মোকাবেলা করতে হচ্ছে নাজিবকে। সাবেক ওয়ানএমডিবি’র ইউনিট এসআরসি থেকে এক কোটি ডলার অবৈধভাবে নেয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
প্রতিটি মামলার বিপরীতে বড় অংকের অর্থ জরিমানা ও ১৫ কিংবা ২০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। রায়ের সাজা ঘোষণা বিলম্ব করতে চাচ্ছেন নাজিবের আইনজীবীরা। তবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ফেডারেল কোর্টে আবেদন করবেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন নাজিব। ওয়ানএমডিবি থেকে সাড়ে চার কোটি ডলার চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
কৌঁসুলিদের দাবি, তহবিল থেকে এক কোটির বেশি ডলার তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে শত শত সমর্থক এসে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আদালতে আসলে সমর্থকরা তার ‘দীর্ঘ জীবন’ কামনা করে স্লোগান দেন। ফেস মাস্ক পরা নাজিব আদালতে ঢোকার সময় দলের শীর্ষ নেতারা তার চারপাশে ছিলেন।
নাজিবের আইনজীবীরা বলেন, মালয়েশীয় অর্থদাতা জো লো ও ওয়ানএমডিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা নাজিবকে ভুল পথে নিয়ে গেছেন। তাকে বলা হয়েছিল যে তার অ্যাকাউন্টে যে তহবিল জমা করা হয়েছে, তা সৌদি রাজপরিবার দান করেছে। এটা যে এসআরসি থেকে তসরুফ করা, তা তাকে বলা হয়নি। তবে জো লো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পাঁচ বছরের বেশি ঝুলে ছিল। কিন্তু তাকে হারিয়ে মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নতুন করে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের নেতৃত্বে নাজিবের দল আবার ক্ষমতায় আসায় এই মামলাকে দেশটি থেকে দুর্নীতি উৎখাতের বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Discussion about this post