বিডি ল নিউজঃ দেশে কি পরিমান ইথিলিন পলিমার আমদানি হয় অথবা দেশে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তার কি কোন হিসেব আছে ? শুধু তােই নয় প্লাস্টিক পণ্যের জন্য কি পরিমান পলিমার আমদানি হয় এবং কারা কতটুকু করতে পারে তার কি কোন ধরা বাঁধা নিয়ম আছে ? জলাবদ্ধতা থেকে শুরু করে বায়ু দূষণ, নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে যাওয়া পর্যন্ত যে দূষক পদার্থটি বেশী দায়ী তার নাম হল পলিথিনি এবং সাথে সাথে প্লাস্টিকের পন্য সামগ্রি । এর প্রমাণও কিন্তু খুব স্পষ্ট । কয়েকদিন আগে একটি ডলফিনের পেট থেকে উদ্ধার করা হয় বিশ কেজিরও অধিক পরিমাণ প্লাস্টিক সামগ্রী । জীব বৈচিত্রের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আরও বেশী পড়বে । যত প্লাস্টিক সামগ্রী রয়েছে তা এক সময় ডুবে গেলে যে জায়গায় তা ডুবে যাবে সে জায়গায় সহজেই নদী বা সমুদ্রের তলদেশের জীব বৈচিত্র চাপা পড়বে এবং আস্তে আস্তে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে । ঢাকার জলাবদ্ধতার জন্যও এই প্লাস্টিক সামগ্রী কখনও কখনও পঞ্চাশ ভাগ পর্যন্ত দায়ী । ড্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পলিথিন আর প্লাস্টিক সামগ্রীতেই ।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যপার যা থেকে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদিত হয় সেই কাচামাল কতটুকু আসছে, কতটুকু পর্যন্ত আনতে পারবে এমন কোন নিয়মের বাধ্যবাধকতা এখন পর্যন্ত চোখে পড়ার মত নয় । অথচ প্রত্যেকটি প্লাষ্টিক পণ্য থেকেই আবার প্লাস্টিক পণ্য তৈরী করা সম্ভব । যদি রিসাইকেল করা সম্ভব হয় তবে অনেক দূষণও কময়ে আনা সম্ভব । তাছাড়া 2015 সালে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদগণ তাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরীতে আবিস্কার করে এক ধরনের পলিমার যা ইথিলিন থেকে আলাদা ধরনের এবং যা সহজেই ধ্বংস করা সম্ভব । বিজ্ঞানীরা বলছে এই জাতীয় প্লাস্টিক সবুজ প্লাস্টিক নামেও অভিহিত করা যেতে পারে ! তারমানে প্লাস্টি দূষণ থেকে বের হয়ে আসার জন্য এ ধরণের পলিমার থেকে উৎপাদিত প্লাস্টিকও সমাধানের পথ দেখাতে পারে ।
একটি কোমল পানীয় খাচ্ছেন আর ফেলে দিচ্ছেন রাস্তায় বা ডাস্টবিনে আর এগুলোই সরাসরি যাচ্ছে ড্রেন হয়ে নদীতে । ড্রেনও জ্যাম হচ্ছে নদীয় শেষ হচ্ছে এ যেন এক পরিকল্পিত নদী হত্যাকান্ড । যারা প্লাস্টিক বোতলে কোমল পানীয় বিক্রি করছেন অথবা অন্য কোন পণ্য বিক্রি করছেন তাদের বোতল ফিরিয়ে নেওয়া আইন করে বাধ্যতা মূলক করা হোক । কোন কোম্পানির কোন বোতল রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক । প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে আনতে প্লাস্টিকের পণ্যের রিসাইকেল ও রিইউজ করাটা বর্তমানে খুব বেশী জরুরী । এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি । আশা করি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন ।
সাঈদ চৌধুরী
রসায়নবিদ ও
সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
শ্রীপুর, গাজীপুর
Discussion about this post