পরীক্ষার ৪০ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন। প্রশ্নফাঁসের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, ‘কেন্দ্রে পৌঁছানোর আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে দেখার কোনও সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট আগে অর্থাৎ প্যাকেট খোলা ও পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর সময়ের মধ্যে সেটি ফাঁস হয়।’ রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
তবে ডিবি পুলিশের এই যুগ্ম কমিশনারের ভাষ্য, ‘যেভাবে প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়াচ্ছে, পরিস্থিতি ওইরকম নয়। যে সময় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় তখন শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকে। ফলে সরাসরি বা কারও মাধ্যমে যদি সেই প্রশ্নপত্রের উত্তর তাদের কাছে পৌঁছায় তাহলেই তারা উপকৃত হতে পারে। তা না হলে কোনোভাবেই উপকৃত হওয়া সম্ভব নয়।’
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, প্রশ্নফাঁস চক্রের যেসব সদস্যকে আটক করা হচ্ছে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপের অ্যাডমিন। তবে মূল প্রশ্ন ফাঁসকারীদের কাউকে এখনও আটক করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমেই পরীক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন পৌঁছে যায়। প্রশ্নের প্যাকেট খোলা ও পরীক্ষার্থীদের কাছে তা পৌঁছানোর সময়ের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা মোবাইল ফোনে প্রশ্নের ছবি তুলে গ্রুপগুলোতে দিয়ে দেয়।’
বিভিন্ন গ্রুপের অ্যাডমিনদের কাছে ছবি সরবরাহ করে কারা, তাদের আটক করা সম্ভব হয়েছে কিনা— এসব প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘রুট পর্যন্ত যাওয়া কঠিন। তবে এটা অসাধ্য নয়, এজন্য সময় প্রয়োজন। যারা গ্রুপগুলোতে মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে থাকে এমন ৩০০ মোবাইল নম্বর ইতোমধ্যে ব্লক করা হয়েছে। আমরা এ প্রক্রিয়ার মূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ১৪ সদস্যকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলো— রাহাত ইসলাম, সালাউদ্দিন, সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায় ওরফে শাওন, আলামিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম নোমান, আমানুল্লাহ, বরকতুল্লাহ, আহসান উল্লাহ, শাহাদাত হোসেন স্বপন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিদ রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ২৩টি মোবাইল ফোন, নগদ ২ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
Discussion about this post