নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইতিহাসে পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে অনেক। ভুক্তভোগিদের পক্ষে মামলার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়নের পর এই প্রথম কোনো মামলার রায় হতে যাচ্ছে আজ ।
আজ বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করবেন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মিরপুরের ইরানি ক্যাম্প এলাকায় একটি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক জনির। সেই রাতেই তৎকালীন পল্লবী থানার উপপরিদর্শক জাহিদসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য জনিকে থানা হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। পরে একই বছরের ৭ আগস্ট নিহত জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি তৎকালীন পল্লবী থানার উপপরিদর্শক জাহিদুর রহমান জাহিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।
রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের প্রথম রায় আজ ঘোষণা করা হবে। মামলার আসামি এসআই জাহিদসহ পাঁচজন। এই আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রায়ে আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তিই আশা করছি।’
এদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। আর রাষ্ট্রপক্ষও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আশা করছি, আসামিরা খালাস পাবেন।’
এর আগে গত ২৪ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এই তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলায় অপর চার আসামি হলেন, রাশেদুল ইসলাম (উপপরিদর্শক), কামরুজ্জামান মিন্টু (সহাকারী উপপরিদর্শক) এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে জনিকে মারার অভিযোগ এনে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। ওই দিন আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল উপপরিদর্শক জাহিদসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় মোট ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
Discussion about this post