রংপুর প্রতিনিধি: ৫৬ ঘন্টায়ও সন্ধান মেলেনি রংপুরের কাউনিয়ায় জাপানি নাগরিক হোসিও কোনি এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকার পক্ষের প্রধান কুশলী রংপুর বিশেষ জজ আদালতের বিশেষ পিপি হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের রংপুর বিভাগীয় ট্রাস্টি এ্যাডভোকোটে রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনার।
তাকে উদ্ধারের দাবিতে আজ রবিবার প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে রংপুর মহানগরী। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক খুব কম সময়ের মধ্যে বাবু সোনাকে উদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছেন পরিবারের লোকজনকে।
বেলা ১১ টায় রংপুর আইনজীবি সমিতির উদ্যোগে সকল আইনজীবিরা দিনব্যাপী কলম বিরতি পালন করে। এছাড়াও তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে নিখোঁজ এ্যাডভোকেট বাবু সোনার সুস্থ্য অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এসময় বক্তব্য রাখেন, সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট কাইয়ুম মন্ডল, জজ আদালতের পিপি ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মুকুল। অন্যদিকে একই সময়ে রংপুর লায়ন্স ক্লাব ও লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের কর্মচারী কর্মকর্তাবৃন্দ এ্যাডভোকেট বাবু সোনাকে উদ্ধারের দাবিতে রংপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আল হেলাল, সেক্রেটারী আজহারুল ইসলাম, লায়ন্স এনামুল হক সোহেল প্রমুখ।
এছাড়াও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে নগরীর ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় বক্তব্য রাখেন,কাজী মোঃ জুননুন, সাখাওয়াত হোসেন রাঙ্গা প্রমুখ। এছাড়াও তাকে উদ্ধারের দাবিতে ডিসি ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ, রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটি। এসময় ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি বনপালি পাল, মহানগর সভাপতি এ্যডভোকেট কমল মজমুদার, পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ধীমান ঘোষ, মহানগর সভাপতি তাপস ঘোষ প্রমুখ। এসময় মানববন্ধন বিক্ষোভ ও স্মারকলিপিতে বক্তারা বলেন, দুই দিনেও পুলিশ তার কোন সন্ধান দিতে না পারায় আমরা উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে তাকে সুস্থ্য শরীরে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে সকালে এ্যাডভোকেট বাবু সোনার বাড়িতে সরেজমিনে দেখতে যান রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক। এসময় রংপুর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সব বিষয় মাথায় রেখে বাবু সোনাকে উদ্ধারের কাজ চলছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই সুস্থ্য অবস্থায় এ্যাডভোকেট বাবু সোনাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।
উল্লেখ্য শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে গোসল শেষে কাজের কথা বলে নগরীর তাজহাট বাবুপাড়ার বাসা থেকে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তির সঙ্গে একটি লাল মোটরসাইকেলে করে চলে যান। এরপর থেকে তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ, পিবিআই, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।
তদন্তরত আইনশৃংখলা বাহিনীল সদস্যরা জানায়, এ্যাডভোকেট বাবু সোনা রংপুরে চাঞ্চল্যকর জাপানী নাগরিক কোনিও হোসি ও মাজারের খাদেম রহতম আলী হত্যা মামলার মামলার সরকারপক্ষের কুশলী ছিলেন। যেখানে ৭ জেএমবি জঙ্গির ফাঁসির রায় হয়েছে। মাহিগঞ্জের ডিমলায় দেবোত্তর সম্পত্বি উদ্ধারের জন্য তিনি তৎপর ছিলেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলারও তিনি স্বাক্ষি ছিলেন। এছাড়াও তিনি আওয়ামীলীগের নেতা ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। এসব বিষয় ক্লু সামনে রেখে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
Discussion about this post