নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে সচিব কমিটি যে সুপারিশ করেছে তা মন্ত্রিপরিষদের সভায় অনুমোদন পেয়েছে।
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব সফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, শিগগির এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে সরাসরি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকছে না। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে বহাল থাকছে।
তিনি বলেন, আজ কালের মধ্যেই মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। সে অনুসারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এ নিয়ে সব মিলিয়ে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে।
এর আগে কোটা পর্যালোচনায় গঠিত কমিটির প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানোর পর সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়।
সরকারি চাকরিতে বাংলাদেশে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ, জেলা ও নারী কোটা ১০ শতাংশ করে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটা পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ আছে প্রতিবন্ধী কোটা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এই কোটার সুবিধা সন্তানদেরকেও দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তা নাতি-নাতনিদেরকেও দেয়া হয়।
তবে এবার কোনও বিশেষ কোটার কথা না সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে গত ফেব্রুয়রিতে শুরু হয় আন্দোলন। তারা সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশ করার দাবি জানায়।
গত ৮ থেকে ১১ এপ্রিল নানা ঘটনার পর ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন কোনো কোটা থাকবে না। তবে গত ১২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে। এখন এটি বাতিল হলে তিনি আদালত অবমাননায় পড়বেন।
কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সুপারিশ দিতে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন হয়। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পারার পর তিন মাস সময় বাড়ানো হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ সব কোটা বাতিলের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয়। আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটা বাতিলের সুপারিশ অনুমোদন দেয়া হল।




Discussion about this post