নথি বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্ত বদলে দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডেসপাস শাখার রাইটার মো. রুবেলের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (২৪ মে) চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) শামীম-উর রশিদ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অপরদিকে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার জামিন নামঞ্জুর করে রুবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তেজগাঁও থানার আদালতে সাধারণ নিবন্ধন শাখার মুন্সি পুলিশের কনেস্টবল বিনয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৯ মে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে রুবেলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলার আরেক আসামি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন ঘটনার দায় স্বীকার করে গত ১৫ মে জবানবন্দি দেন। তার আগে ১৩ মে তরিকুলের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এ মামলার বাকি দুই আসামি ফরহাদ ও নাজিম উদ্দিনও ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা এ মামলায় গত ১০ মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ফাতেমা ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই নথি বের করে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় কারা জড়িত তাদের নামও বলেছেন তিনি। তাকে মতিঝিল সরকারি টিঅ্যান্ডটি কলোনির বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।
নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপনের পর তিনি অধ্যাপক ড. এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতিপর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ফোনে তরিকুলকে জানিয়ে দেন। এরপরই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। এই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পর দ্বিতীয় দফায় ১০ হাজার টাকা তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেন।
এ ঘটনায় গত ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।
Discussion about this post