করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে দেশের ইতিহাসে হওয়া প্রথম ভার্চুয়াল আদালতে হালদা নদীর বিপন্ন ডলফিন রক্ষায় একটি রিট করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন ভার্চুয়াল আদালতের ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুসরণ করে সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেছেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন বলেন, ‘করোনার এই ক্রান্তিকালে আমরা আমাদের সমুদ্র সৈকতে ডলফিনদের প্রাণবন্ত লাফালাফি দেখেছি। কিন্তু অমানবিক আরেক চিত্র দেখছি হালদা নদীর পাড়ে। যেখানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা ডলফিন সম্প্রতি উদ্ধার করা হয়েছে। বিপন্ন প্রজাতির এই ডলফিন হত্যা অবশ্যই অপরাধ। আর প্রাণ-প্রকৃতির অনুষঙ্গ রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই আমি হালদা নদীর ডলফিন রক্ষায় পত্রিকায় প্রকাশিত এসংক্রান্ত রিপোর্ট যুক্ত করে ভার্চুয়াল আদালতে আজ একটি রিট করেছি। এই রিটে মৎস্য সচিব, পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিবাদী করা হয়েছে।
‘দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন ধরে আদালত বন্ধ থাকায় অনেক আইনজীবী ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সোচ্চার হন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘ফুল কোর্ট সভা’ থেকে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারির জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে ভার্চুয়াল উপস্থিতিকে স্বশরীরে আদালতে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য করে “আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ- ২০২০” নামে গত ৯ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে গত ১০ মে ভার্চুয়াল আদালত সংক্রান্ত কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়। যেখানে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ এবং অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের জন্য আলাদা আলাদা ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ দেয়া হয়। এছাড়া আইনজীবীদের জন্য প্রকাশ করা হয় ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’।
এরই ধারাবাহিতায় করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক সাধারণ ছুটি ও অবকাশকালীন ছুটি বা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত, তিনটি হাইকোর্ট বেঞ্চ ও অধস্তন আদালত পরিচালনার নির্দেশনা জারি করা হয়।
এরপর আজ ১১ মে ভার্চুয়াল কোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ভার্চুয়াল বেঞ্চে ১৬টি আবেদন জমা পড়ে।
অন্যদিকে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে হালদা নদীর ডলফিন হত্যা বন্ধ চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। পরবর্তিতে কার্যতালিকায় ওঠার পর ভার্চুয়াল আদালতে এবিষয়গুলো নিয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আবেদন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
এছাড়া বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের ভার্চুয়াল কোর্টে আজ কোন আবেদন জমা পড়েনি।
Discussion about this post