বিডিলনিউজঃ
বাংলাদেশে সরকার ও বিরোধী দলের অনড় রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে যে দুঃসহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশি দূতাবাসগুলো। ঢাকার একাধিক বিদেশি দূতাবাস থেকে গতকাল নিজ নিজ দেশে ২৯ ডিসেম্বরের ঘটনা বিষয়ক প্রতিবেদন পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। আগামী কয়েক দিন ঢাকা থেকে যাওয়া প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ইউরোপীয় জোটসহ প্রভাবশালী কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের ব্যাপারে ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নেবে বলেও কূটনৈতিক সূত্র জানায়। এদিকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন বিদেশি কূটনীতিকরা নিজেদের চলাচল কমিয়ে দিয়েছেন। বড়দিনের ছুটিতে অনেক কূটনীতিক নিজ দেশে গেলেও অন্যরা প্রয়োজনীয় কাজ এবং সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া দূতাবাসের বাইরে যাচ্ছেন না। তারা বাঙালি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে গণমাধ্যমের সরসরি সম্প্রচার ও সংবাদ পর্যালোচনাও করেন। এর মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরির উপকরণ তারা পেয়ে যান।
ঢাকায় ইউরোপীয় একটি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমি যা দেখি, তাতে সহিংসতার একটি সংস্কৃতি রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল বা বিরোধী সবাই কোনো না কোনো সময় সহিংস রাজনীতির চর্চা করেছে। এক্ষেত্রে সহিংসতা দমনে এদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে সচেষ্ট হতে হবে। ইউরোপীয় প্রভাবশালী দেশের ওই কূটনীতিক আরও বলেন, সব মিলিয়ে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিধি আরও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ডান বা বাম বা মধ্যপন্থী যারাই থাকুক না কেন, নিজেদের মতবাদ বা মত স্বাধীনভাবে প্রকাশের সুযোগ পাওয়াও যেমন জরুরি, তেমনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে মতপ্রকাশের চর্চাও করতে হবে। কারণ গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান হতে পারে না। দূতাবাসের ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এভাবে অব্যাহত থাকলে আমাদের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব শীঘ্র নতুন ধরনের সিদ্ধান্ত নিবে।
বিরোধী দলের কর্মসূচি ও খালেদা জিয়াকে বাড়ির বাইরে না যেতে দেওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে এশীয় প্রভাবশালী একটি দেশের দূতাবাস সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে আমরা অনেকটাই বিরক্ত। কারণ আলোচনার মাধ্যমে যেখানে সমস্যা সমাধানের একাধিক উদ্যোগ একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভেস্তে গেছে, সেখানে এখন দুই জোটই মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে। শান্তিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা একান্তই প্রয়োজন।
Discussion about this post