বিডি ল নিউজঃ গতকাল বিকেলে আমাদের খেলা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে আজ সকালটা ছিল কেবলই রোহিত শর্মাকে নিয়ে। ক্রিকেট এমন এক জিনিস, কোথায় কোন রেকর্ড হচ্ছে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে আপনাআপনি। রোহিতের সেই ২৬৪ রানের সেই ইনিংস কি জিম্বাবুয়েকে কিছুটা উৎসাহ দিয়েছে কিনা কে জানি, তবে তারাও আজ শুরুটা করেছে অনেকটা রোহিতের মত করে। আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনের একঘন্টা বেশ দারুণ খেলছিলেন সিকান্দার রাজা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দারুণ কিছু শটস খেলে দলের স্কোরকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন এই জুটি। বাংলাদেশের জন্য যা মোটেও সুখকর ব্যাপার ছিল না। তবে স্বস্বি এনে দিয়েছেন জুবায়ের হোসেন। তার ঘূর্ণি বলের জাদুতেই খেই হারিয়ে ফেলেছে জিম্বাবুয়ে; অতিথিদের প্রথম ইনিংসের চাকা থেমেছে ৩৭৪ রানে। আর তাতে করেই বাংলাদেশ ১২৯ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামার সুযোগ পেয়েছে। তৃতীয় দিনশেষে কোনো উইকেট না দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ৮ ও ইমরুল কায়েস ১১ রানে ব্যাটিং করছেন। দ্বিতীয় ইনিংসের ২৩ রান এবং আগের ১২৯ রানের যোগফল মিলিয়ে দিনশেষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ১৫২ রানের। জহুর আহমেদ চোধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে এদিন স্পিন ধরেছে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথমবারের ৫ উইকেট দখল করেছেন জুবায়ের।
অবশ্য দিনের খেলা শুরুর প্রথম ঘন্টার কিছু পরে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন শফিউল ইসলাম। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে ব্যক্তিগত ৮১ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন বাংলাদেশের এই পেসার। এরপর জুবায়ের হোসেন একই ওভারে টেলর ও সিকান্দার রাজাকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন। মাসাকাদজার আউটের পর দ্রুত বিদায় নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক টেলর। ডাইন দ্য উইকেটে বল মারতে গিয়ে তাইজুল ইসলামের দূর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেছেন মাত্র ১ রান। একই ওভারের তৃতীয় বলে জিম্বাবুয়ের ওপেনার সিকান্দার রাজাকে স্লিপে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছেন জুবায়ের। দিয়ে বিদায়ের নেওয়ার আগে রাজা করেছেন ৮২ রান।
একই ওভারে পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আরভিন ও রেগিস চাকাবভা। কিন্তু আবারও জুবায়েরের স্পিনে উইকেট হারাতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। আরভিনের উইকেট ভেঙ্গে গেছে জুবায়েরের লেগ স্পিনের জাদু বুঝতে না পারায়। আরভিন আউট হলে চাকাবভা এবং চিগাম্বুরা মিলে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে গুরুত্বপূর্ণ ১১৩ রান যোগ করেছেন দলীয় স্কোরে। এই জুটির কল্যাণেই ৩০০ রান পার হতে করতে সক্ষম হয়েছে অতিথিরা। ভাল খেলতে থাকা রেগিস চাকাভা ব্যক্তিগত ৬৫ রানে শফিউলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন। চাকাবভার বিদায়ে জিম্বাবুয়ের রান তোলায় মন্থর গতি এসেছে। দলীয় ৩৫৬ রানে রিচমন্ড মুতমবামি চট্টগ্রাম টেস্টে সাকিব আল হাসানের প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছেন। এর আগে করেছেন ২০ রান। মুতমবামি আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ ঠিকতে পারেননি চিগাম্বুরাও। ৮৮ রান করে আউট হতে হয়েছে তাকে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নিয়েছেন জুবায়ের হোসেন। এছাড়া শফিউল ২টি এবং সাকিব, তাইজুল ও রুবেল একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রথম দুই টেস্ট জিতে এরই মধ্যে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৫০৩/১০; ১৫৩.৪ ওভার (ইমরুল ১৩০, তামিম ১০৯; রাজা ৩/১২৩)
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ৩৭৪/১০; ১০৬ ওভার (চিগাম্বুরা ৮৮, রাজা ৮২, মাসাকাদজা ৮১; জুবায়ের ৫/৯৬, শফিউল ২/৫০)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ২৩/০; ৯ ওভার (তামিম* ৮, ইমরুল* ১১)
Discussion about this post