শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের ন্যায্য দাবী আদায়ের চলমান আন্দোলনে একদম অনড় অবস্থানে রয়েছে ভূক্তভোগীরা। তাঁদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ২৩ আগস্ট তৃতীয় বারের মত আবার রাজধানী ঢাকায় অনশন সমাবেশের ডাক দিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
এই আন্দোলনকে ঘিরে রয়েছে তৃমূখী গতিবিধি ও নানাবিধ কৌশল। তাই নিম্নে তৃমূখী অবস্থানের সামান্য আলোচনা করলাম-
প্রথমত,
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলঃ-
শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের চলমান আন্দোলনের স্বপক্ষে কোন সুবিধা দিতে নারাজ বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের সম্মানিত অবিভাবক বার কাউন্সিল। কিন্তু শিক্ষার্থী তথা সন্তানদের ভুল-ত্রুটি মার্জনা না করে তাঁরা তাদের গতিতেই অবস্থান করছে।
বার কাউন্সিলের অধিকাংশ সদস্যরাই বর্তমান ক্ষমতাশীন দলের বিশ্বস্তের আস্থাভাজন ব্যক্তিত্ব। আর মহামান্য হাইকোর্টের মোস্ট সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে সুপরিচিত। জস,ক্ষ্যতি,সম্মান,ক্ষমতার কোন কমতি নাই। ওকালতি জীবনের সব কৌশল যেন অবহেলীত ভূক্তভোগীদের উপরেই প্রয়োগ করছে। তারা কম্পিউটার সফটওয়্যারের মত সংরক্ষিত নীতিতেই অবস্থানে রয়েছে। যে করে হোক তিন ধাপের পরীক্ষা পদ্ধতি শেষ করবেই। তাতে যত সময় লাগে লাগুক।
দ্বিতীয়ত,
শিক্ষানবিশ আইনজীবীঃ
ভূক্তভোগী শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা শপথ গ্রহণ করেছে যে করে হোক তাঁরা বার কাউন্সিলের অনিয়মের বেঁড়াজাল ভেদ করে আলোর মুখ উম্মোচন করবেই। এ আন্দোলন সফল করার জন্য নানামূখী পদক্ষেপে চলছে বর্তমান আন্দোলন। দীর্ঘ প্রায় মাসাধিকাল ধরে রাজপথে অসহায়ের মত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে চলছে শিক্ষার্থীরা। ইতোঃমধ্যে বার কাউন্সিল করোনা পরিস্থিতির স্বাভাবিকতা ও হল পাওয়া সাপেক্ষে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নোটিশ করেছে। হয়তবা এমন অনিশ্চত পরীক্ষার নোটিশ কোন দেশে কিংবা কোন কালে দিয়েছে কিনা সেটা প্রশ্নই থেকে যায়। এমন অনিশ্চিত আর অস্পস্ট নোটিশের উপর ভিত্তি করে অনেক শিক্ষার্থীরা বই পড়তে দ্বিধা-দ্বন্দে আছে। অনেকের মনে প্রশ্ন আসলে কি পরীক্ষা হবে নাকি আন্দোলন সফল হবে। রয়েছে এমন দোটানা মনোঃভাব। ফলে কেউ কেউ আন্দোলনের কথা ভাবছে আবার কেউ কেউ পরীক্ষার কথা ভাবছে। কোনটা যে লাভ-ক্ষতি সেটা হয়তবা বিধাতায় জানে।
তৃতীয়ত,
কোচিং ব্যবসায়ীঃ-
আইনজীবী তালিকাভূক্তির পরীক্ষা পদ্ধতি যেমন জটিলতা তেমনি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র খুব কঠিন। আর সেই কঠিনের সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে একদল কোচিং ব্যবসায়ী। এই কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত বিজ্ঞ আইনজীবী এমনকি পরীক্ষার্থী শিক্ষানবিশ আইনজীবীরাও রয়েছে। এরা লাভ-স্বার্থের জন্য চায়না বর্তমান আন্দোলন সফল হোক। অনেক কোচিং ব্যবসায়ীরা এ আন্দোলনে মৌখিক সমর্থন জানালেও তাঁদের অন্তরে বলে ভিন্ন কথা। ফলে গোপনে এ আন্দোলনকে ঘিরে নানা প্রকার কটুক্তি করে থাকে। মূল বইয়ের বিকল্প যে কোন কোচিং হতে পারে না সেটা প্রমান করেছে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারীর প্রিলিমিনারী পরীক্ষা। এই পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৪৮ ঘন্টার মধ্যেও কোন কোচিং সেন্টার ১০০% উত্তর নিশ্চিত করতে পারেনি। তাহলে বোঝেন এরা কতটা নির্ভরতার প্রতীক! অনেকে বলছে এসব কোচিং ব্যবসায়ীরা বার কাউন্সিলের দালাল। আমার অনেক প্রিয় বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা কোচিং ব্যবসায় জড়িত তাঁরা এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনা গোপনে নোট-হ্যান্ড নোট তৈরীর কাজে ব্যস্ত তারা। তারাও আন্দোলনকে বানচালে বিভিন্ন অপ-কৌশল চালাচ্ছে।
পরিশেষে বলবো, সকল অপ-কৌশল নশ্যাত করে যেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সমাজে সামাজিক মর্যাদায় বেঁচে থাকতে পারে। সকল অন্ধকার দূর করে আলোর দিশার পথ পায়। বার কাউন্সিল যেন এই নীরিহ,
অসহায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের উপর কোন কৌশল অবলম্বন না করে চলমান আন্দোলনের দাবী মেনে নিয়ে তাঁদের সন্তানতুল্য শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সমাজে বাঁচার জন্য আইন্ডিটি করে দেয়।
Discussion about this post