বিডি ল নিউজঃ আসছে মধু মাস । আম কাঁঠাল, জাম, লিচু সব ফল নামবে এক সাথে । চারিদিকে গন্ধ আর অন্য রকম বাঙালিয়া আমেজ বিরাজ করতে থাকবে চারিদিকে। প্রাচীন কাল থেকে বলা হয়ে থাকে মধু মাসের ফল খেলেই গ্রীস্মের সকল রোগ থেকে দূরে থাকা যায় । উল্টে গেছে চিত্র । মধু মাসের মধুভরা ফল সামনে থাকলেও খাওয়ার ক্ষেত্রে যেন চরম দ্বিধা । আম পেকে হলুদ হয়ে আছে ঘ্রাণ নেই, কাঠাল পেকে নরম হয়ে গেছে হলদে রং নেই, লিচু লাল হয়ে আছে অথচ বিচি পরিপূর্ণতা পায়নি !
অবাক করার মত বিষয় হল গতকাল দেখলাম ফলের দোকানগুলোতে হলুদ হলুদ আম । কিন্তু আমগুলোর বোটা কালো হয়ে আছে ও সজীবতা নেই । জিজ্ঞেস করলাম কোন জায়গার আম ? বললো রাজশাহীর আম আসা শুরু হয়ে যাচ্ছে ।
এসময়টা হচ্ছে দেশী আমের সময় । প্রচুর পরিমাণ দেশী আম আসে সারা দেশ থেকে । তা না করে এরা নিয়ে আসছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী কিছু আম যেগুলো মাত্র বড় হয়েছে অথচ পাকার সময় হয়নি ।
সব কিছু পাকার জন্যই ব্যবহার হয় আলাদা আলাদা কেমিক্যাল । কার্বাইড, ইথোফেনন, ফর্মালিন, তুতে ব্যবহার করে আগেভাগে পাকানোর প্রক্রিয়া হয়ত শুরুই হয়ে গেছে এখন । কিছুদিন পর দেখা যাবে রাস্তায় ট্রাকে ট্রাকে আম নষ্ট করা হচ্ছে রাসায়নিক মেশানো বলে । নষ্ট করে ফেলার আগে যদি সচেতন হয়ে গাছ থেকে পারার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যায় তবে যেমনি কমতে পারে দূষণ ও ভেজাল যুক্ত ফল তেমনি কমতে পারে অপচয় !
ফলে বিষগুলো মেশার কারণে আগের চেয়ে বড় ধরণের রোগগুলো দিনদিনই বাড়ছে । বিশেষ করে খাদ্য নালীর ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সারের বৃদ্ধি কেমিক্যাল মিশ্রিত এ ধরণের খাদ্য গ্রহনের ফলাফলই বলা যেতে পারে ।
কিডনি বিকল, ক্যন্সার, হার্ট এ্যাটাকের ঝুকি বেড়ে যাওয়া সব কিছুই হচ্ছে এই খাদ্য অনিরাপত্তার কারণে বেড়ে যাচ্ছে দিন দিনই ।
রসালো আম কিনতে যাবেন, মনে ভয় চলে আসবে কেমিক্যাল মেশানো কিনা । অনেক কেমিক্যালযুক্ত আম প্রতিবছর ট্রাকের চাপায় পিষ্ট করে নষ্ট করা হয় কেমিক্যাল মেশানো বলে । দেখে খুব কষ্ট হয় । যদি একটু সচেতন করে মানুষকে কেমিক্যালের ব্যবহার নিয়ন্ত্রন করা যেতো তবে এত ফলন নষ্ট করার প্রশ্নই আসতো না এবং মানুষও বাঁচতো ভয়ানক রোগের থাবা থেকে ।
পুরোপুরি ভরা ফলের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে এখন থেকেই সঠিকভাবে তদারকি করলে হয়ত কমে যেতে পারে কেমিক্যল মিশিয়ে স্লো পয়জন সৃষ্টি করে মানুষ মারার এ অপকৌশল । অনেক কৃষক ও পাইকাররা নাও জানতে পারে যে তারা পানির মত দ্রব্য মিশিয়ে ফল সংরক্ষনে যা করছে তা অপরাধ এ জন্য এ বিষয়ে সচেতনতা মূলক নাটক অথবা কি করলে সহজে ফল সংরক্ষন করা যাবে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা বিষয়ক নাটিকাও গণমাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে ।
যারা জেনে বুঝে এই অপরাধগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হোন । মৌসুম শুরুর আগেই কিভাবে এত আম বাজারে আসছে বা যারা আনছে তাদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা গেলে এই অপরাধ কমে যেতে পারে । খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানো আমাদের খুব বেশী প্রয়োজন জাতিকে সঠিকভাবে কর্মক্ষম রাখার জন্যই ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ ব্যপারে পদক্ষেপ নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি । সুষ্ঠ খাদ্য ব্যবস্থাপনাই পারে রোগ মুক্ত সুস্থ্য দেহ দিতে ।
সাঈদ চৌধুরী
রসায়নবিদ ও
সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
শ্রীপুর, গাজীপুর
Discussion about this post